মার্কিন সফরে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কড়া অবস্থান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। গতকাল মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় সন্ত্রাসবাদ ইস্যুটি তুলে ধরেন মোদী। তাঁর সাফ কথা, 'সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কিন্তু-পরন্তু করা যায় না'। পাকিস্তানের নাম না নিয়েই মোদী মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের উদ্দেশ বলেন, 'রাষ্ট্র সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।' উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক ভাবে ১৯৬০-এর দশক থেকেই ভারতের থেকে পাকিস্তানেরই বেশি ঘনিষ্ঠ ছিল আমেরিক। তবে চলতি শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। ওবামা জমানা থেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হয় আমেরিকার। সেই সম্পর্ক বিগত কয়েক বছরে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব বেড়েছে আমেরিকার। এই আবহে পাকিস্তান সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ নিয়ে মার্কিন সংসদে সরব হলেন মোদী। (আরও পড়ুন: হোয়াইট হাউজে উষ্ণ অভ্যর্থনা বাইডেন দম্পতির, উপহারে কী কী পেলেন মোদী?)
গতকালকের ভাষণে আমেরিকার ৯/১১ থেকে মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলার উল্লেখ করেন মোদী। তিনি বলেন, 'কট্টরপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদ এই বিশ্বের জন্য এক বড় হুমকি।' তিনি ধর্মীয় কট্টরপন্থার বিষয়ে বলেন, 'এই ধরনের নীতি নতুন মোড়কে সামনে আসে। তবে এদের উদ্দেশ্য একটাই। সন্ত্রাসবাদ মানবজাতির শত্রু। এই ইস্যু মোকাবিলার ক্ষেত্রে কোনও কিন্তু-পরন্তু চলে না। যে যে শক্তি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে এবং সন্ত্রাসবাদের রফতানি করে তাদের দমন করতে হবে।'
এদিকে মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে চিনকেও পরোক্ষভাবে আক্রমণ শানান মোদী। তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রসংঘের সনদের নীতির প্রতি শ্রদ্ধা, বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি মান্যকার উপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যবস্থা গড়ে ওঠে।' মোদী আরও বলেন, 'গণতন্ত্র ভারতের জন্য পবিত্র একটি মূল্যবোধ। এটি দীর্ঘকাল ধরে বিকশিত হয়েছে এবং বিভিন্ন রূপ এবং ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে চলেছে। তবে, একটি জিনিস পরিষ্কার হয়েছে। মানুষের সমতা ও মর্যাদাকে সমর্থনকারী চেতনা হল গণতন্ত্র। গণতন্ত্র হল সেই ধারণা যা সমালোচনা, বিতর্ক এবং আলোচনাকে স্বাগত জানায়। গণতন্ত্র হল সেই সংস্কৃতি যা চিন্তা ও ভাব প্রকাশকে ডানা মেলে ধরতে সাহায্য করে। অনাদিকাল থেকে এমন মূল্যবোধ পেয়ে ভারত ধন্য। গণতান্ত্রিক চেতনার বিবর্তনে ভারত এই মূল্যবোধের জননী।' এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতেও মুখ খোলেন মোদী। তিনি বলেন, 'এটা যুদ্ধের যুগ নয়। এখন আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে হবে। ইউক্রেন সংঘাতের কারণে সেই অঞ্চলে অনেকে কষ্ট পাচ্ছেন। আমি জনসমক্ষে বহুবার বলেছি, যুদ্ধ নয় শান্তি চাই।'