করোনাভাইরাস রুখতে সারাদেশে কঠোরভাবে লকডাউন ও সামাজিক দূরত্বের বিধি পালনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ভারতের সরকারি নীতির প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় সেই দাবি করা হয়েছে।
লকডাউন-সহ মহামারী নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক ও দফতরের নীতি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ চিহ্নিত করতে সেই গবেষণা চালানো হয়েছিল। তাতে মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর অ্যালগোরিদম ব্যবহার করা হয়েছিল। যা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল পিএলওএস ওয়ানে।
সেটির অন্যতম গবেষক তথা অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর রণিতা বর্ধন বলেন, ‘ভারত বিশাল ও বৈচিত্রপূর্ণ দেশ। পাশ্চাত্যের দেশগুলির ক্ষেত্রে সুবিধা হল যে শেষ সীমানার বাড়িও ডিজিটাইলাইজেশনের আওতায় আছে। সেখানে ভারত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাই দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল এবং একইসঙ্গে ডিজিটাল পরিকাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয়তাও ছিল। ভারতের মতো দেশে যেখানে দারিদ্র্যতা ও সমৃদ্ধি সহাবস্থান করে, সেখানে এটা বিশাল কাজ ছিল।’
গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মোদীর পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের প্রস্তুতি ও প্রশমনের কৌশল চালিত হয়েছে। এমনকী তিনি বারবার জনসমক্ষে (মন কি বাত, জাতির উদ্দেশে ভাষণ) আসার ফলে দেশের ১৩০ কোটি মানুষকে কড়া লকডাউনে রাখার কাজটা সহজ হয়েছে। একইসঙ্গে সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রেও
অপর গবেষক রমিত দেবনাথ জানিয়েছেন, মানুষের প্রতি মোদীর আশ্বাসের ফলে ওষুধ প্রস্তুতকারক, আর্থিক, স্বাস্থ্যের মতো খাতে কড়া লকডাউনের সার্বিক প্রভাব পড়েছিল। মানুষের মন থেকেই যাতে অনুপ্রেরণার সঞ্চার হয়, সেই উদ্দেশেই বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছিল। যেমন - বৈদ্যুতিন চ্যানেলে করোনা সংক্রান্ত তথ্যের বারবার সম্প্রচার, বলিউড গান, কবিতা, নাটকের মাধ্যমে দীর্ঘকালীন সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। রামায়ণ ও মহাভারতের মতো অনুষ্ঠানের সম্প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে নস্টালজিয়ার সমুদ্রে ডুবিয়ে রেখে বাড়িতেই থাকতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল।
একইসঙ্গে জনসমক্ষে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য যোগা ও আয়ুর্বেদ, রেলের কোচকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে পরিবর্তিত করা, পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুপমেন্ট (পিপিই) ও মাস্ক তৈরি করা, দেশীয় প্রযুক্তির করোনা পরীক্ষার কিট উৎপাদনের মতো ক্ষেত্রেও সাফল্য মিলেছে।