ভারতীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর ২০০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুজরাটের মরবি জেলার তাঁর জন্মস্থান টাঙ্কারায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও সমাজের স্টেরিওটাইপ চিন্তাভাবনার নানা দিক তুলে ধরেছেন।
মোদী এদিন বলেছিলেন যে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী এমন এক সময়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যখন ভারতীয়রা দাসত্ব এবং সামাজিক কুফলের মধ্যে আটকা পড়েছিলেন। স্বামী দয়ানন্দজিই তখন জাতিকে বলেছিলেন কীভাবে কুসংস্কার দেশকে গ্রাস করেছে এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনাকে দুর্বল করেছে। এই সমস্ত সামাজিক কুফল আমাদের ঐক্যকে আঘাত করেছে। সেই সময় সমাজের একটি অংশ ক্রমাগত ভারতীয় সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল। এমন সময়ে স্বামী দয়ানন্দজিই ভারতীয়দের বৈদিক জীবনে ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। আর ভারতের জাতীয় শিক্ষা নীতিতে বৈদিক সমাজের সেই মূল্যবোধকেই সংযুক্ত করা হয়েছে, বৈদিক শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরও বলেন যে, আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা বেদের যৌক্তিক ব্যাখ্যা করে দেখিয়েছিলেন যে দর্শনের আসল প্রকৃতি কী। প্রকাশ্যে সমাজের স্টেরিওটাইপকে ভেঙেও ছিলেন তিনিই। এইভাবেই ভারতীয় সমাজে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছিলেন । এরপর থেকেই মানুষ বৈদিক ধর্ম জানতে শুরু করে। বৈদিক শিক্ষা নিতেও শুরু করে ভারত।
- দয়ানন্দ সরস্বতী ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছিলেন
মোদী বলেছেন, 'স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমাদের সবাইকে এই অমৃত কালের ভারতকে আধুনিকতার দিকে নিয়ে যেতে হবে এবং একটি উন্নত জাতিতে পরিণত করতে হবে।'
স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী যে গুজরাট জন্ম নিয়েছিলেন, সেই একই রাজ্যে জন্ম নিতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
আর্য সমাজ দেশে এবং বিদেশে ২৫০০ টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে
আর্য সমাজ দেশে এবং বিদেশে ২,৫০০ টিরও বেশি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে। এছাড়াও এটি ৪০০ টিরও বেশি গুরুকুলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করে।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী সমাজে নারীদের সমান অধিকারের পক্ষে ছিলেন। নতুন নীতি ও সৎ প্রচেষ্টায় দেশে আজ নারীরাও এগিয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে, এই দেশটি নারী শক্তি বন্দন আইনের মাধ্যমে লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের সংরক্ষণের সুবিধা দিয়েছে। আজ মহর্ষি দয়ানন্দের প্রতি এটাই হল সত্যিকারের শ্রদ্ধাঞ্জলি।