পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণে সংসদে ২ বাঙালির নজির তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদের একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ভূপেন্দ্রকুমার দত্ত, অন্যজন পাকিস্তানের প্রথম আইনমন্ত্রী যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল। দু’জনকেই দেশভাগের কয়েক বছর পর পূর্ব পাকিস্তানে লাগাতার বঞ্চনার শিকার হয়ে ভারতে চলে আসতে হয়।
এদিন মোদী বলেন, 'আমি কংগ্রেসের কাছে জানতে চাইব আপনারা কখনও ভূপেন্দ্রকুমার দত্তের নাম শুনেছেন? দেশভাগের পর যে ভাবে পাকিস্তানে হিন্দু, শিখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে ভাবে অত্যাচার হয়েছে, জোর জবরদোস্তি হয়েছে, তা কল্পনাও করা যায় না। অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটিতে ছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে ২৩ বছর জেলে থাকেন তিনি। ৭৮ দিন জেলে অনশন করেন।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দেশভাগের পর ভূপেন্দ্রকুমার দত্ত পাকিস্তানেই থেকে যান। সেখানে সংবিধান সভার সদস্য ছিলেন। সংবিধান তৈরির কাজ যখন চলছে তখন তিনি সংবিধান সভায় বলেন, সীমান্তের এপারে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। যাঁরা এখনো এপারে রয়েছি তারা অসম্ভব দ্বিধায় বাস করছি। এর পরে পাকিস্তানে পরিস্থিতি এত খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে তাঁকে ভারতে চলে আসতে হয়েছিল। ভারতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।'
এর পর যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের প্রসঙ্গে আসেন তিনি। বলেন, 'আরও একজন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল পাকিস্তানেই বাস করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি সমাজের একেবারে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করতেন তিনি। তাঁকে পাকিস্তানের প্রথম আইনমন্ত্রী করা হয়েছিল। ১৯৫০ সালের ৯ অক্টোবর উনি ইস্তফা দেন। সেই ইস্তফায় তিনি লিখেছিলেন, হিন্দুদের বিতাড়ন করার এই নীতি পূর্ব পাকিস্তানে সাফল্যের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। পাকিস্তানের দাবি পূরণ হলেও মুসলিমরা সন্তুষ্ট নয়। তাদের নিরাপত্তার অভাব এখনো কাটেনি। তাই তারা এখন হিন্দু মেধাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। যাতে পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক জীবন যেন কোনও ভাবেই হিন্দুদের দ্বারা প্রভাবিত না হয়।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দুই ব্যক্তিত্বের বয়ানে স্পষ্ট জন্মের পর থেকেই সংখ্যালঘুদের প্রতি পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গী কী? আজও তার বদল হয়নি।