'নারী নির্যাতন মামলায় যত দ্রুত বিচার হবে, তত এই সমাজ আস্বস্ত হবে।' আজ দিল্লিতে জেলা বিচার বিভাগের জাতীয় সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় বিচারকদের উদ্দেশে এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই নিয়ে মোদী বলেন, 'দেশে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য অনেক কঠোর আইন রয়েছে। তবে নারী নির্যাতন আটকাতে সেই আইনগুলিকে প্রয়োগ করে আরও দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।' আরজি কর কাণ্ডের আবহে যখন কলকাতা সহ গোটা বাংলা উত্তাল, সেই সময় মোদীর এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। এদিকে আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। উল্লেখ্য, আগামী সপ্তাহেই তাঁর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে ফের উঠবে আরজি কর মামলা। (আরও পড়ুন: পড়েন ভুটানের স্কুলেও, TCS-এ চাকরি করে UPSC পাশ ২০১৩-তে, জানুন DC ইন্দিরার বিশদ)
আরও পড়ুন: 'পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো…' পোস্ট করতে 'বাধ্য' কর্তারা, কে দিচ্ছেন নির্দেশ?
আরও পড়ুন: প্রতিবাদীদের জমায়েতে 'বাইকের ধাক্কা'! ৫ ঘণ্টা অবরোধের পর পুলিশ, সিভিকের নামে FIR
আজ নরেন্দ্র মোদীবলেন, 'বর্তমান সময়ে যে নৃশংসতা দেখা যাচ্ছে, তাতে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নারীর প্রতি অত্যাচারের ক্ষেত্রে যত দ্রুত বিচার করতে হবে। তাঁরাই দেশের জনসংখ্যার আর্ধেক। তাই নারী নির্যাতন মামলা যত দ্রুত বিচার হবে, নারী নিরপত্তা নিয়ে ততই এই সমাজ আস্বস্ত হবে।' এই আবহে মোদী আজ বলেন, 'বিচার প্রক্রিয়ায় যাতে দেরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে গত এক দশকে অনেক পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিচার ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকার ১০ বছরে আট হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। বিচার ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য গত ২৫ বছরে যে অর্থ খরচ করা হয়েছিল, তার ৭৫ শতাংশ ১০ বছরেই খরচ করেছে বিজেপি সরকার।' (আরও পড়ুন: আরও ঘনীভূত আরজি করের লাল জামা রহস্য, ডিসি সেন্ট্রালের দেওয়া তথ্য কি ভুল?)
আরও পড়ুন: আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ডিএনএ মিলল শুধু একজনের: রিপোর্ট
এদিকে আরজি কর কাণ্ডের আবহে কয়েকদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি ছিল, ধর্ষণের বিরুদ্ধে কড়া আইন আনা হোক। সেই চিঠির পরপরই কেন্দ্রের তরফ থেকে মমতাকে জবাব দিয়ে জানানো হয়েছিল, রাজ্য তো ধর্ষণের বিচারের জন্যে অনুমোদিত ফাস্টট্র্যাক কোর্টগুলিকেই চালু করেনি। তবে গতকাল ফের একবার এই একই ইস্যুতে চিঠি লেখেন মমতা। আর ফের একার তার জবাব এল দিল্লি থেকে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে কড়া আইন চেয়ে এর আগের লেখা চিঠির জবাব মোদী নিজে দেননি বলে 'উষ্মা' প্রকাশ করেছিলেন মমতা। তবে দিল্লি থেকে আসা দ্বিতীয় জবাবটিও মোদী পাঠালেন না। সেই জবাব এল কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবীর তরফ থেকেই। আগেরবারও মমতাকে তিনিই জবাব দিয়ে রাজ্যের ভুল দেখিয়ে দিয়েছিলেন চোখে আঙুল দিয়ে। এবারও তাঁর জবাবে সেই একই 'ভুলের' উল্লেখ ছিল।
আরও পড়ুন: 'গো-ভক্ষক' সন্দেহে বাংলার যুবককে খুন BJP শাসিত রাজ্যে, তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ
৩০ অগস্ট লেখা চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, 'ধর্ষণ এবং ধর্ষণ ও খুনের মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে যাতে কেন্দ্রীয় আইন নিয়ে আসা হয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা যায় এবং সেই আইনে যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করার নিয়ম থাকে, সেই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য আপনাকে ফের আমি আন্তরিকভাবে আবেদন জানাচ্ছি।' আর এর জবাবে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবীর চিঠিতে লেখা, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অধীনে এখনও অনুমোদিত ১১টি ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্ট চালুই করেনি পশ্চিমবঙ্গ। গত চিঠিতেও এই বিষয়ে উল্লেখ ছিল। পশ্চিমবঙ্গে যে ৮৮টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট আছে, তার থেকে এই স্পেশাল ফাস্টট্র্যাক কোর্ট পুরো আলাদা। এগুলে ধর্ষণ ও পকসো মামলার বিচারের জন্যে গঠিত। বাংলায় ৪৮ হাজার ৬০০টি ধর্ষণ ও পকসো মামলা ঝুলে রয়েছে। তার পরেও রাজ্য সরকার অনুমোদিত অধিকাংশ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করেনি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর সাজার বিধান ইতিমধ্যেই আছে।