সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে হিংসা ছড়িয়েছে, তার দায় কংগ্রেস ও 'শহুরে নকশালদের' দিকে ঠেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজ রামলীলা ময়দানে সভা দিয়ে দিল্লির প্রচার শুরু করেন মোদী। উন্নয়ন প্রসঙ্গে আপকে সমালোচনা করলেও বিধানসভা ভোটের বৈতরণী পেরোনোর জন্য দিল্লিতেও বিজেপি যে জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগকে হাতিয়ার করতে চলেছে, তা শুরুতেই স্পষ্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার নামে পুলিশের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মোদী। তিনি বলেন, 'শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য স্বাধীনতার পর থেকে ৩৩,০০০ পুলিশকর্মী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ আপনারা (বিক্ষোভকারীরা) তাঁদের নৃশংসভাবে মারছেন। যখন কোনও সমস্যা হয়, তখন পুলিশ আপনাদের ধর্ম-বর্ণ জানতে চায় না। যে কোনও পরিস্থিতিতেই আপনাদের সাহায্য করে পুলিশ।'
মোদী দাবি করেন, ধর্মের বিরুদ্ধে তাঁর সরকার কখনও ভেদাভেদ করেনি, তা উন্নয়ন বা যে কোনও প্রসঙ্গই হোক না কেন। তাঁর প্রশ্ন, 'আমি তাদের (বিরোধীদের) থেকে জানতে চাই দিল্লিতে বিনা অস্বীকৃত কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার সময় কি কারোর থেকে ধর্ম জানতে চেয়েছিলাম? কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন তাঁরা, তা জানতে চেয়েছিলাম? আমরা কি বলেছিলাম ১৯৭০, ১৯৮০ সালের নথি নিয়ে আসতে?'
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। মোদীর কথায়, 'আমরা কেন এরকম করেছিলাম? কারণ, আমরা দেশের ভালোবাসার জন্য বাঁচি। আমরা সবকা সাথ, সবকা বিকাশের আদর্শ দীক্ষিত। দেড় কোটি গরীরের ঘর বানিয়েছি। জাতি-ধর্ম জিজ্ঞাসা করিনি। শুধু গরিবি দেখেছি। নথি ও শংসাপত্রের নামে আজ যাঁরা মুসলিমদের ভুল পথে চালিত করছেন, তাঁদের মনে রাখা দরকার গরিবের উন্নতির সময় আমরা নথির ক্ষেত্রে কোনও বাধা আরোপ করিনি।'
নাগরিক আইনে বিরোধীদের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি আইনটি নিয়ে দেশের যুবসমাজকে পড়াশোনা করারও আর্জি জানান মোদী। তিনি বলেন, 'কংগ্রেস, তার বন্ধুরা ও কিছু শহুরে নকশাল গুজব ছড়াচ্ছে যে মুসলিমদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে। নিজের শিক্ষাকে শ্রদ্ধা জানাও। এনআরসি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে পড়াশোনা করুন। আপনারা শিক্ষিত।'
পাশাপাশি, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মোদীর আশ্বাস, এই আইন কারোর নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে না। বরং এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।