৮ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার ক্রিপ্টো প্রতারণায় অভিযুক্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা লিথুয়ানিয়ার সেই ব্যক্তিকে কেরল থেকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই এবং পুলিশের একটি যৌথ দল। ধৃত ব্যক্তি ক্রিপ্টো প্রতারণার অন্যতম চক্রী বলে জানিয়েছে কেরল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম আলেকসেজ বেসিওকোভ। ‘গ্যারান্টেক্স’ নামে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ খুলে বসেছিলেন তিনি। হ্যাকিং-সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে ক্রিপ্টো বিনিয়োগ করতেন বলে অভিযোগ। প্রায় ৮ লক্ষ ৩০ হাজার কোটির ক্রিপ্টো প্রতারণার অভিযোগ ওঠে আলেকসেজের বিরুদ্ধে। তারপর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকাতেও তাঁর নাম রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে আলেকসেজের খোঁজ চালাচ্ছিল ট্রাম্প প্রশাসন। অবশেষে গোপন সূত্রে মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে, দক্ষিণ ভারতের একটি রাজ্যে আত্মগোপন করে আছেন আলেকসেজ।তারপর থেকে আলেকসেজের খোঁজে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। ঘটনাচক্রে, কেরলে তাঁর হদিস পায় পুলিশ। তারপরই বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ‘গ্যারন্টেক্স’ নামে একটি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ খুলে বিনিয়োগ এবং লেনদেনের কাজ করছিলেন আলেকসেজ। সেই টাকা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ, জঙ্গি সংগঠনেও ব্যবহার করা হচ্ছিল। শুধু তাই নয়, তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে ক্রিপ্টো প্রতারণার অভিযোগও ওঠে। ২০২২ সালে আলেকসেজকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে যান তিনি।
কেরলে আলেকসেজের হদিস মেলার পর ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের অনুরোধে এ সপ্তাহে আলেকসেজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বিদেশ মন্ত্রক। তারপরই সিবিআই এবং কেরল পুলিশের যৌথ অভিযানে তিরুঅনন্তপুরম থেকে গ্রেফতার করা হয়ে আলেকসেজকে।যৌথ দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, ভারত থেকে পালানোর ছক কয়েছিল সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে পারেনি। ভারত ছেড়ে পালাতে যেতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের নথি অনুসারে, ২০১৯ সাল থেকে গ্যারান্টেক্স-কে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে বেসিয়োকোভ। সেই গ্যারান্টেক্সের প্রযুক্তিগত প্রশাসক ছিল। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অপরাধী সংগঠন গুলি গ্যারান্টেক্স-এর মাধ্যমে কমপক্ষে ৯৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের লেনদেন করেছে। তার এই উদ্যোগ ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনকে সহজতর করেছে।সিক্রেট সার্ভিসের অভিযোগপত্র বলছে বেসিয়োকোভের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। মার্কিন আইনে এর সর্বোচ্চ সাজা ২০ বছরের কারাদণ্ড। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা আইন লঙ্ঘনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও করা হয়েছে। এর সর্বোচ্চ সাজাও ২০ বছরের কারাদণ্ড। এছাড়া লাইসেন্সবিহীন অর্থ প্রেরণ ব্যবসা চালানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।