ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্করতর ঘটনা। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের নগ্ন করে মারধর, আর সেইসঙ্গে গোপনাঙ্গে ডাম্বেল বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো। এখানেই থেমে থাকত না অত্যাচার। জ্যামিতি বক্স থেকে ক্যাম্পাস বের করে সারা শরীরে গেঁথে দেওয়া হতো। কার্যত এভাবেই র্যাগিংয়ের নামে চলত পাশবিক অত্যাচার। ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি কেরলের কোট্টায়ামের একটি সরকারি নার্সিং কলেজের। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শেষমেষ তৃতীয় বর্ষের ৫ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: চাটানো হল টয়লেটের সিট, ভয়ঙ্কর র্যাগিং, অপমানে আত্মঘাতী পড়ুয়া, তদন্তে SIT
জানা গিয়েছে, তৃতীয় বর্ষের পাঁচজন নার্সিং ছাত্র এভাবেই দিনের পর দিন প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালাচ্ছিল। তিনজন প্রথম বর্ষের ছাত্র অভিযোগ দায়ের করার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এরপরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অ্যান্টি র্যাগিং আইনের অধীনে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ অনুয়ায়ী, র্যাগিং শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের নভেম্বরে। তারপর থেকেই ভয়াবহ অত্যাচারের শিকার হচ্ছিল প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা।
তাদের ওপর নির্মমভাবে অত্যাচার করার পরেও ক্ষতস্থানে এমন লোশন লাগানো হত যে তাতে যন্ত্রণা আরও বেড়ে যেত। এতে ছটফট করত নির্যাতিতরা। তারা ধারাবাহিক হিংসাত্মক আচরণের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। নির্যাতিতরা জানিয়েছে, যে সিনিয়ররা তাদের নগ্ন হয়ে দাঁড়াতে বাধ্য করত। তারপর তাদের গোপনাঙ্গ থেকে ভারোত্তোলনের জন্য তৈরি ডাম্বেল ঝুলিয়ে দেওয়া হত।
অভিযোগকারীরা জানাচ্ছেন, যে তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা কম্পাস এবং এই ধরনের অন্যান্য জিনিস ব্যবহার করে তাদের শরীর ফুটিয়ে দিত। আর সেই ক্ষতস্থানে লোশন লাগাতে বাধ্য করত। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, পড়ুয়াদের মুখে ও হাতে ক্রিম লাগাতে বাধ্য করা হত এবং মুখে ঘষে দেওয়া হত। আর এই নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে না জানানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, অভিযোগে আরও বলা হয়েছে যে সিনিয়র ছাত্ররা প্রতি রবিবার জুনিয়রদের কাছ থেকে মদ কেনার জন্য নিয়মিত টাকা আদায় করত। আর না দিলেই তাদের উপর হামলা চালাত। মারধর করত।নির্যাতিত তিন ছাত্র কোট্টায়াম গান্ধীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ধৃতদের বুধবার বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, কয়েকসপ্তাহ আগেই কোচিতে ১৪ বছর বয়সি এক স্কুল পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছে। এক্ষেত্রেও তার পরিবার স্কুলে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে। তারপরেই কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবানকুট্টি শিক্ষা পরিচালককে (ডিজিই) এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আর এবার নার্সিং কলেজে র্যাগিংয়ের অভিযোগ সামনে এল।