প্রথমে প্রেমিকের সঙ্গে তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিং। তারপর সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে কলেজ ছাত্রী ওই তরুণীকে ব্ল্যাকমেল করে একাধিবার ধর্ষণ করল প্রেমিকের বন্ধুরা। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার কটকে। এই অভিযোগে, পুলিশ তার প্রেমিক সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করল। ধৃতদের মধ্যে মধ্যে রয়েছে এক নাবালক এবং একটি ক্যাফের মালিক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে ওড়িশায়। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা জানিয়েছে বিরোধীরা। ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথিবীরাজ হরিচন্দন বলেছেন, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ভিখারিও, কীভাবে সংঘটিত হয়েছিল অপরাধ? জানাল পুলিশ
জানা গিয়েছে, তরুণী ওড়িশার কটকের বাদামবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগ, প্রেমিক সহ অভিযুক্তরা তাকে ধর্ষণ করেছে। মহিলার অভিযোগ অনুযায়ী, প্রথম ঘটনাটি ঘটে দশমীর দিন। প্রেমিকের জন্মদিন উপলক্ষে তার সঙ্গে কটকের একটি ক্যাফেতে গিয়েছিলেন তরুণী। সেই সময় দুজনে ঘনিষ্ট হয়। তাদের সেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়েছিল। এরপর সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে তার প্রেমিকের বন্ধুরা তাকে একে একে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তারা ভিডিয়ো দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় কলেজ ছাত্রীকে ডাকে। আর যেতে আপত্তি জানালেই সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিত অভিযুক্তরা। ফলে বাধ্য হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে তরুণীকে যেতে হতো তাদের কাছে।
তরুণীর অভিযোগ, ক্যাফের মালিক এই ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে সাহায্য করেছিল। শেষ পর্যন্ত তরুণী পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর গত ৪ নভেম্বর তিনি বাদামবাড়ি থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তরুণীর প্রেমিক, ক্যাফে মালিক, একজন নাবালক এবং আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে বিএনএস, আইটি আইন এবং তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এছাড়া, পুলিশ তাদের মোবাইল ফোন থেকে ভিডিয়োগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে। সেগুলি পরীক্ষার জন্য ভুবনেশ্বরের রাজ্য ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা নির্যাতিতাকে দুবার যৌন নির্যাতন করেছে। পুলিশ আধিকারিক এই ধরনের ঘটনায় নির্যাতিতাকে কোনও দ্বিধা ছাড়ায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার আবেদন করেছিলেন।
এদিকে, ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথিবীরাজ হরিচন্দন এই ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ঘটনাটি এমন সময়ে ঘটেছে যখন রাজ্য সরকার ২০৩৬ সালের মধ্যে ওড়িশাকে মহিলাদের জন্য অপরাধমুক্ত রাজ্য ঘোষণা করার জন্য কাজ করছে। এদিকে, কটক-বারাবতী কংগ্রেসের বিধায়ক সোফিয়া ফিরদৌস এফআইআর দায়েরে বিলম্বের অভিযোগ করেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি জানান, নির্যাতিতা আগেও পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু, পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি।