মঙ্গলবার ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে উত্তর প্রদেশের হাথরসে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পথপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে হাথরস। ঘটনার পর অনুষ্ঠানস্থলে চারিদিকে শুধু পড়েছিল নিথর দেহ। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে তড়িঘড়ি উদ্ধারকাজে পৌঁছয় পুলিশ। আর সেই উদ্ধারকাজ করতে গিয়েই আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল। মৃত্যুর স্তূপ দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক পুলিশ কর্মীর।
আরও পড়ুন: ‘ভোলেবাবা’-রই নাম নেই হাথরাসের FIR-এ, গাড়ির ধুলো নিতেই হয় হুড়োহুড়ি, মৃত ১২১
জানা গিয়েছে, মৃত পুলিশকর্মীর নাম রবি যাদব (৩০)। তিনি কুইক রেসপন্স টিমের কনস্টেবল পদে নিযুক্ত ছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছিল কুইক রেসপন্স টিম। তার সদস্য হিসেবে রবি যাদবও সেখানে গিয়েছিলেন। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য জড়ো করা হচ্ছিল। সেই সময় আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন রবি। এতগুলি মৃতদেহ একসঙ্গে দেখেই তিনি অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও সুস্থ না হওয়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ইটাহ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
যাদবের সহকর্মী ললিত চৌধুরী বলেন, ‘হাথরসে এতগুলি মৃতদেহ একসঙ্গে দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন যাদব। আমরা যখন মৃতদেহগুলি জড়ো করার কাজ করছিলাম। তখন হঠাৎই মাটিতে পড়ে যান যাদব। আমরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণে তিনি মারা যান।’ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এতগুলি মৃতদেহ একসঙ্গে দেখার ফলে আঘাত সইতে পারেননি যাদব। তার ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে যাদবের পরিবারে। জানা গিয়েছে, ইটাহ জেলার আওয়াগড় থানায় কনস্টেবল ছিলেন রবি। তবে তিনি এক মাস ধরে কিওয়ারটিতে কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, হাথরসে সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানের জন্য একটি প্যান্ডেল করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় লক্ষাধিক ভক্তের ভিড় হয়েছিল। ভোলে বাবা নামে এক ধর্মীয় গুরুর নেতৃত্বে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল ফুলরাই গ্রামে।
ইতিমধ্যেই ২৭ টি মৃতদেহ ইটাহ জেলার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ জন মহিলা। শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ১২১ জন হয়েছে। এছাড়াও আহত রয়েছেন ২৮ জন। ১৯ জনের দেহ এখনও পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে সেই কমিটি।