দুদিন ধরে নিখোঁজ স্ত্রী। তাঁর সন্ধানে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তন্নতন্ন করে খুঁজে বেরিয়েছেন ক্যাব চালক স্বামী। কিন্তু, কোথাও খুঁজে পাননি স্ত্রীকে। শেষ পর্যন্ত শেষ পর্যন্ত ঘরের সোফা কাম বিছানার ভিতর থেকে উদ্ধার হল মহিলার দেহ। আর দুদিন ধরে সেই বিছানার উপরেই শুয়ে ছিলেন ক্যাব চালক। এমনই হাড়হিম ঘটনা ঘটল পুণের ফুরসুঙ্গির হদপসারের কাছে হুন্দেকার বস্তিতে। মহিলার নাম স্বপ্নালী উমেশ পাওয়ার (২৪)। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় খুনের মামলার রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তাতে প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মহিলাকে।
আরও পড়ুন: পণের দাবি না মেটায় স্ত্রীকে খুন করল স্বামী, বাপেরবাড়ি থেকে নিয়ে এসে অত্যাচার
জানা গিয়েছে, মহিলার সঙ্গে তার স্বামী উমেশের শেষ কথা হয়েছিল ৭ নভেম্বর সকালে। ওইদিন স্বপ্নালী সকাল ১০ টার দিকে ক্যাব চালককে ফোন করেছিলেন।সেই সময় ক্যাব চালক বাড়িতে ছিলেন না। তিনি বাইরে ছিলেন। প্রতিদিনকার মতোই তিনি ক্যাব নিয়ে বেরিয়েছিলেন। যাত্রীদের নিয়ে তিনি বাইরে গিয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্যাব চালক পরের দিন ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু, ফোনে স্ত্রীকে না পেয়ে এক বন্ধুকে তার খোঁজ নিতে বলেন। কিন্তু, ক্যাব চালকের বন্ধু তাদের বাড়িতে স্বপ্নালীর কোনও সন্ধান পাননি। উমেশ সেদিন বিকেলে পুণে ফিরে আসেন এবং স্ত্রীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন। বন্ধুর বাইকে চেপে দুদিন ধরে তল্লাশির পরেও স্ত্রীকে খুঁজে পাননি উমেশ। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন। শেষে শনিবার সকাল ৭টার দিকে তিনি স্ত্রীর গয়না চুরি হয়েছে কি না তা দেখার জন্য উমেশ বিছানার মালপত্র রাখার বাক্স খুলতেই দেখেন ভিতরে রয়েছে স্ত্রীর নিথর দেহ। তা দেখার পর কার্যত হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন ক্যাব চালক। সেই বিছানার ওপরেই দুদিন ধরে ঘুমিয়ে ছিলেন উমেশ।
ফুরসুঙ্গী পুলিশের সিনিয়র ইন্সপেক্টর মঙ্গল মোধাওয়ে বলেন, ‘আমাদের ধারণা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টেও শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।’
মহিলার গলায় পেরেকের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। তবে কেউ দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মহিলার সঙ্গে এক যুবকের পরিচয় ছিল। মাঝে মধ্যেই সে তাদের ঘরে যেত। এমনকী থাকত সেখানে। সেই যুবক পুলিশের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। তবে তার ফোন বন্ধ থাকায় ওই যুবককে খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ঘটনার সময় উমেশ যে পুণেতে ছিলেন না সে বিষয়টি তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে। জানা গিয়েছে, উমেশ এবং স্বপ্নালীর প্রায় চার বছর আগে বিয়ে হয়েছে। তারা একটি ভাড়া ঘরে থাকেন। তবে ওই বাড়িতে কোনও সিসিটিভি ফুটেজ নেই। তাই আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আঙুলের ছাপ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, উমেশের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে খুন এবং ডাকাতির এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।