পুলিশ এবং প্রতিবাদী শিক্ষকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্র ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বাড়ির সামনে অবস্থানরত শিক্ষকদের হঠিয়ে দেয় পুলিশ। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আগরতলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে ওই শিক্ষকদের সঙ্গে সরকারের সংঘাত চলছে অনেকদিন ধরেই। বুধবার তা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। অভিযোগ, বুধবার ভোরে আগরতলায় শিক্ষক–শিক্ষিকাদের আন্দোলন মঞ্চ সরিয়ে দেয় পুলিশ। সেই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে আগরতলা। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষক–শিক্ষিকাদের রীতিমতো সংঘর্ষ চলে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বাড়ি ঘেরাও করেন বিভোক্ষকারীরা।
জানা গিয়েছে, টানা ৫২দিন ধরে রাজধানীতে ধর্ণা চলছে চাকরি হারানো শিক্ষকদের। এদিন সকালে আন্দোলন উঠিয়ে দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি বাঁধে বিক্ষোভকারীদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে পুলিশ। ব্যবহার করা হয় জলকামানও। সব মিলিয়ে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। তবে আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তাঁদের সেখান থেকে হঠাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। তাতে আহত হন বেশ কয়েকজন। পরিস্থিতি দেখে গোটা আগরতলা পুর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
উল্লেখ্য, বাম জমানায় ১০ হাজার ৩২৩ শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগে তখন ত্রিপুরা হাইকোর্ট এইসব নিয়োগ বাতিল করে দেয়। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টও। তারপর বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে ওই শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ আরও দু’বছর বাড়ানো হয়। কিন্তু এরপর তাঁদের চাকরীর মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকার করে শীর্ষ আদালত। আর বিপ্লব দেব সরকার আদালতের সেই রায়কে রূপায়ণ করতে গেলেই শুরু হয় শিক্ষিকদের সঙ্গে টানাপোড়েন।
শহরজুড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রনে আনতে দফায় দফায় জল কামান ব্যবহার করা হয়। ঘটনাকে ঘিরে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই ঘটনার পেছনে বিরোধী সিপিএম দলের প্ররোচনা রয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির।
সিপিআইএমের প্রবীণ নেতা বিজন ধর বলেন, ‘এই ঘটনার প্রতিবাদ করছি। আমাদের দাবি, চাকরি হারানো শিক্ষক–শিক্ষিকাদের দাবি মেনে নিয়ে কাজ করুক রাজ্য সরকার।’ আর এখানের বিজেপি মুখপাত্র নব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘শিক্ষকদের এমন আচরণ করা উচিত হয়নি। এখানে শিক্ষকদের একাংশ সিপিআইএমের হয়ে কাজ করেছে এবং তাদের প্ররোচনায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে।’