দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে অযোধ্যা ও বাবরি মসজিদ বিষয়ক সংশোধনী নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে দেশের তামাম বিরোধীরা। ইতিহাস বিকৃতি এবং শিক্ষায় গেরুয়াকরণের অভিযোগ তুলে বিদ্ধ করা হয়েছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংকে (এনসিইআরটি)। এই আবহে এবার মুখ খুললেন রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাস মহারাজ। তিনি এই সংশোধনী নিয়ে ‘অসন্তুষ্ট’ বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আর এই অসন্তোষ এনসিইআরটি’র বিরুদ্ধে। কারণ তারা অযোধ্যা আন্দোলনই মুছে দিতে চেয়েছেন বলে তাঁর দাবি।
এদিকে ১৯৯২ সালে অযোধ্যার মাটি থেকে বাবরি মসজিদে প্রথম আঘাত হেনেছিল কর সেনারা। তারপর সময় বয়ে গিয়েছে অনেকটা। এখন সেখানে বাবরির অস্তিত্ব চিরতরে মুছে এখন গড়ে উঠেছে রাম মন্দির। এবার এনডিএ সরকারের আমলে এনসিইআরটি দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাস থেকেও মুছে দেওয়া হল বাবরির অস্তিত্ব। এই বিষয়ে সংবাদসংস্থা এএনআই–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাস মহারাজ বলেন, ‘তারা উল্লেখই করল না তিনটি গম্বুজ কাঠামো কেমন করে সরানো হল ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। তারা শুরুই করল ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর তারিখ দিয়ে। যেদিন অযোধ্যা নিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: চার বিধানসভা উপনির্বাচনে পাঁচজন ইনচার্জ নিয়োগ করলেন সুকান্ত, প্রার্থী ঘোষণা কবে?
অন্যদিকে পুরনো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে অযোধ্যা ও বাবরি মসজিদের ইতিহাস সংক্রান্ত বিবরণ নিয়ে চার পাতা লেখা ছিল। নতুন বইয়ে সটা কমে দু’পাতা হয়েছে। আর সংশোধনীতে গুজরাটের সোমনাথ থেকে বিজেপির রথযাত্রা, বাবরি মসজিদ ধ্বংস, সাম্প্রদায়িক অশান্তি, তৎকালীন উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির মতো বিষয়গুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকী, বাবরি মসজিদ শব্দটিও ব্যবহার করা হয়নি নতুন বইয়ে। এই গোটা বিষয়টি নিয়েই ‘অসন্তুষ্ট’ রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাস মহারাজ।
এছাড়া দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইতে বাবরি মসজিদ প্রসঙ্গে আগে লেখা ছিল ১৬০০ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মির বাকি, এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীন স্বশাসিত সংস্থা এনসিইআরটি যে নয়া সিলেবাস প্রকাশ করেছে সেখানে বাবরি মসজিদের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এই বিষয়ে সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে এনসিআরটির ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি বলেছেন, ‘আমরা চাই, আমাদের নাগরিকদের মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠুক। এটাই আমাদের পাঠ্যপুস্তকের উদ্দেশ্য। আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য, উগ্র মানসিকতার নাগরিক তৈরি করা নয়। পাঠ্যপুস্তকের ওইসব অংশ উগ্র ও হতাশাগ্রস্ত নাগরিক তৈরি করতে পারে। ছোট বাচ্চাদের কি দাঙ্গার কথা শেখানো উচিত?’