কর্নাটকে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমেই চরমে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের একটা বড় অংশের মধ্যেই অসন্তোষ দানা বাঁধছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও যে ইয়েদুরাপ্পাকে ভালো চোখে দেখছেন, তা কিন্তু নয়। তবে তাঁরা এখনই রাজ্য নেতৃত্বে বড় কোনও পরিবর্তন ঘটাতে চাইছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন বারের বিজেপি বিধায়ক জানান,‘৩৫ থেকে ৪০ জন বিধায়ক রয়েছেন, যাঁরা দলের সক্রিয় কর্মী, তাঁরা পরিবর্তন চাইছেন।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে বিধায়কদের সঙ্গে পরিবর্তনের ব্যাপারে কোনও আলোচনা করবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। জানা গিয়েছে, দুই জন বিজেপি বিধায়ক তো গত মঙ্গলবার দিল্লিও চলে গিয়েছেন।আরও বেশ কয়েকজন বিধায়ক আগেই দিল্লিতে গিয়েছেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার জন্য।কিন্তু তাঁরা কী কারণে দিল্লিতে এসেছেন, সেবিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, ওই সব বিজেপি বিধায়করা কর্নাটকের দায়িত্বে থাকা অরুণ সিংয়ের সঙ্গে দেখাও করেন। কিন্তু তাঁদের বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিজেপির সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী, ৭৫ বছরের বেশি বয়সি কেউ প্রশাসনিক পদ গ্রহণ করতে পারবে না। কিন্তু ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটের আগেই ৭৫ বছর হয়ে যায় ইয়েদুরাপ্পার। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ইয়েদুরাপ্পাকে কীভাবে ফের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তখন থেকেই দলের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিলই।সম্প্রতি কর্নাটকের রাজনীতিতে সেই অসন্তোষ আরও চরমে উঠেছে। বিশেষ করে দলের মধ্যে অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে বি ওয়াই বিজয়েন্দ্রের কাজকর্মকে ভালো চোখে দেখছে না।তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগও রয়েছে।
সাম্প্রতিককালে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে।দলের তরফে ইয়েদুরাপ্পাকে দল ও প্রশাসনের কাজে আরও বেশি সময় দেওয়া ও দলের মধ্যে তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া অসন্তোষ দূর করার কথা বলা হয়েছে।কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সতর্ক বার্তা সত্বেও পরিস্থিতির যে খুব একটা উন্নতি হয়েছে, তা কিন্তু নয়।
এদিকে ইয়েদুরাপ্পা শিবির যে পুরো বিষয়টি জানে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইয়েদুরাপ্পা ঘনিষ্ঠ তথা রাজস্বমন্ত্রী আর অশোক জানান,‘দিল্লিতে যে মিটিং হয়েছে, সেটা আমাদের নজরে রয়েছে।কেউ কেউ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, আবার কেউ কেউ পরোক্ষভাবে জড়িত। তবে বিজেপি যে এখনই ইয়েদুরাপ্পাকে সরাবে, সেই উপায়ও নেই।ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বি এস ইয়েদুরাপ্পার কর্নাটকে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের ওপর বিশাল প্রতিপত্তি রয়েছে।কর্নাটকের রাজনীতিতে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের ভালো প্রভাব রয়েছে।এর আগে যখন ইয়েদুরাপ্পা বিজেপি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, তখন এই সম্প্রদায়ের সমর্থন বিজেপির কাছ থেকে সরে যায়।২০১২ সালে বিজেপি থেকে চলে যাওয়ার পর ২০১৩ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপির ৪০টি আসন কমে যায়।