গেরার্ড ডি সুজা
বিজেপির নেতা অশ্বিনী উপাধ্য়ায় ইউনিফর্ম সিভিল কোডের প্রয়োগ করার দাবিতে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। গত মার্চ মাসে সেই মামলার জেরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জবাব তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই আইনে মূলত বিয়ে, বিবাহ বিচ্ছেদ, সম্পত্তির উত্তাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে একটিই আইন থাকবে। ভারতের নাগরিক হিসাবে সকলের জন্য প্রযোজ্য হবে এই আইন। তবে বর্তমানে ভারতের ধর্ম বৈচিত্রতার জেরে ভিন্ন ধর্মের জন্য ভিন্ন আইন রয়েছে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের আগেই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ইউনিফর্ম সিভিল কোডের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এরপর থেকে বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্য এই দাবির পক্ষে সওয়াল করা শুরু করেছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেই দিয়েছেন ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু হলে মুসলিম মহিলারা খুব স্বস্তি পাবেন। কেউ তাঁর স্বামীকে অন্য মহিলার সঙ্গে ভাগ করতে চান না। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছেন, সেখানেও ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করতে তারা রাজি।
তবে এখন কি কোথাও ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু আছে? সেই প্রসঙ্গেই এবার একাধিক মন্ত্রী গোয়ার প্রসঙ্গ টেনে আনছেন। কী সেই গোয়া আইন ?
১৮৬৭ সালে পর্তুগালে পর্তুগীজ সিভিল কোড তৈরি হয়। ১৮৬৯ থেকে সেটি গোয়াতেও চালু হয়। এই আইনে বিবাহ নিবন্ধীকরণ করতেই হয়। সেই আইনে স্ত্রীও স্বামীর সম্পত্তির অর্ধেকের দাবিদার। ডিভোর্সের পরেও এই দাবি করা যায়। অ্যাভোকেট ক্লিওফাটো আলমেইদা বলেন, এই আইনে লিঙ্গ বৈষম্য নেই। অত্যন্ত এগিয়ে থাকা আইন। এদিকে এই আইনে মেয়েদেরকে অর্ধেক সম্পত্তি দিতে হয়। বিয়ের পরে সমস্ত সম্পত্তির মালিকানা স্বামী ও স্ত্রী উভয়ই হন। তবে নিয়ন্ত্রণের অধিকার থাকে স্বামীর হাতে থাকে।
তবে এর ব্যতিক্রমও আছে।
এক্ষেত্রে মুসলিমদেরও দুবার বিয়ের অধিকার দেওয়া হয়নি। কিন্তু অদ্ভূতভাবে হিন্দুদের ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। ২১ বছরে যদি কোনও স্ত্রী যদি গর্ভধারণ করতে না পারেন অথবা ৩০ বছরের মধ্যে কোনও পুত্রসন্তান না হয় তবে হিন্দু পুরুষ দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারবেন।
এনিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তবে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সেসময় জানিয়েছিলেন খাতায় কলমে থাকলেও তা বাস্তবে প্রয়োগ হয় না। ১৯১০ সাল থেকে কাউকে এই সুবিধা দেওয়া হয়নি। তবে অনেকের মতে মুসলিমদের টার্গেট করার জন্যই এই ইউনিফর্ম সিভিল কোডের কথা বলা হচ্ছে।