ছত্তিশগড়ের সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকর হত্যা মামলায় প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে এসেছে, যা শিউরে দেওয়ার মতো! কীভাবে নৃশংসতার সঙ্গে খুন করা হয়েছে সাংবাদিককে? সেই তথ্য উঠে এসেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। তাতে চিকিৎসকরাও কার্যত হতবাক হয়েছেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যেরকম নৃশংসভাবে মুকেশকে হত্যা করা হয়েছে তাতে দুইয়ের অধিক ব্যক্তি ছাড়া এভাবে খুন সম্ভব নয়। ইতিমধ্যেই ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যার মধ্যে তিন জন মুকেশে তুতোভাই। আর এদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত সুরেশ চন্দ্রকরকে হায়দারাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে সিট। তাদের হেফাজতে নিয়ে তদন্তকারীরা আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: ছত্তিশগড়ে সাংবাদিক খুনে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত সুরেশ
ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, খুনের আগে মুকেশের ওপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুকেশের মাথার খুলিতে ১৫টি ফ্র্যাকচার রয়েছে। এছাড়া, ছিঁড়ে বের করে নেওয়া হয়েছে তাঁর হৃৎপিণ্ড। লিভার চার টুকরো করা হয়েছে। রিপোর্টে আরও জানা গিয়েছে, ঘাড়ের হাড় ভাঙা হয়েছে। পাঁজরের হাড় পাঁচটি জায়গায় ভাঙা রয়েছে। এছাড়াও, তাঁর একটি হাতের হাড় ভেঙে গিয়েছে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাঁর হৃৎপিন্ড। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, মুকেশকে ভারী বস্তু দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে। যার ফলে তাঁর মাথা, বুক, পিঠ এবং পেট গুরুতর জখম হয়েছিল। তাঁর হাতের ট্যাটু দেখে তাঁর দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানাচ্ছেন, তিনি তাঁর ১২ বছরের কর্মজীবনে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখেননি। তাঁর বক্তব্য, এরকম হত্যাকাণ্ডে দুইজনের বেশি চিকিৎসক ছাড়া সম্ভব নয়। প্রাথমিক তদন্তে সিট জানতে পেরেছে, মুকেশের তুতোভাই রিতেশ এবং সুপারভাইজার মহেন্দ্র তাঁকে লোহার রড দিয়ে আক্রমণ করে এবং রাতের খাবার নিয়ে বিতর্কের সময় তাঁকে হত্যা করে।অপরাধ ধামাচাপা দিতে দুজনে মুকেশের দেহ একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে লুকিয়ে সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেয়। তারা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড এবং অন্যান্য বস্তু নষ্ট করে দেয়। মুকেশের মোবাইল ফোনও ফেলে দেয়।
উল্লেখ্য, মুকেশ এনডিটিভির একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। এছাড়াও বাস্তার জংশন নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালাতেন, যার প্রায় ১.৫৯ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর এনডিটিভিতে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। তাতে বিজাপুরে একটি রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতি প্রকাশ করা হয়। সেই ক্ষোভেই খুন করা মুকেশকে।