জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল। কম্পন অনুভূত হয়েছে দিল্লি, উত্তরাখণ্ড-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায়। ইতিমধ্যে নেপালে কমপক্ষে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই। নেপালের যে এলাকাগুলিতে কম্পন অনুভূত হয়েছে, সেখানে নামানো হয়েছে সেনাও।
ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার (ইংরেজি মতে বুধবার, ৯ নভেম্বর) রাত ১ টা ৫৭ মিনিটে নেপালে (উত্তরাখণ্ড লাগোয়া নেপাল সীমান্তের কাছে) ভূমিকম্প হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৩। ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল। ভারতের উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের দক্ষিণ-পূর্ব ২০৫ কিলোমিটার, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের উত্তরে ২৬৬ কিলোমিটার, উত্তরাখণ্ডের হৃষিকেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ২৮৫ কিলোমিটার এবং উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ২৯০ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্পের উৎসস্থল অবস্থান করছে।
ভূমিকম্পে নেপালে মৃত্যু
মঙ্গলবার রাত থেকেই কমপক্ষে চারবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত নেপাল। ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত ন'টার দিকে নেপালে জোড়া ভূমিকম্প হয়েছিল। রিখটার স্কেলে একটির মাত্রা ছিল ৪.৯। দ্বিতীয়টির মাত্রা ছিল ৩.৫। তারপর রাতে জোরালো কম্পন অনুভূত হয়। রাত ৩ টে ১৫ মিনিটে আরও একবার কেঁপে ওঠে নেপাল। তখন রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৩.৬।
সেই পরিস্থিতিতে কমপক্ষে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে নেপালে। এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬.৩ মাত্রার যে ভূমিকম্প হয়েছিল, তার জেরে দোতি জেলায় একটি বাড়ি ভেঙে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে একজন মহিলা আছেন। সেইসঙ্গে আছে দুই শিশুও। দোতির মুখ্য জেলা আধিকারিক কল্পনা শ্রেষ্ঠা জানিয়েছেন, পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ধস নেমেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক বাড়ি।
ভারতের কম্পন অনুভূত
জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা-সহ উত্তর ভারতের একাংশে কম্পন অনুভূত হয়েছে। এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নয়াদিল্লি স্টেশনে এক যাত্রী বলেন যে 'আমরা অটো থেকে নামার সময় কম্পন অনুভূত হয়। অটোচালকও ভয় পেয়ে যান। আমরা চারিদিকে ঘুরে দেখি যে বাকিরাও কম্পন অনুভব করেছেন।' গ্রেটার নয়ডায় কর্মরত তরুণী প্রজুষা বলেন, 'যখন কম্পন অনুভূত হয়, তখন আমি অফিসে ছিলাম। এটা যে ভূমিকম্প, তা বুঝতে পেরে দ্রুত অফিস ছেড়ে বেরিয়ে আসি আমরা।'
সকালে উত্তরাখণ্ডে (নেপাল সীমান্তের কাছে) ভূমিকম্প
তারইমধ্যে আজ সকালে উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড়ে নতুন করে ভূমিকম্প হয়েছে। যে এলাকা নেপাল সীমান্তের কাছে অবস্থিত। জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬ টা ২৭ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে ভূমিকম্প হয়েছে পিথোরাগড়ে। ভূপৃষ্ঠের পাঁচ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৩। হরিদ্বারের পূর্ব ২২৪ কিমি, হৃষিকেশের পূর্বে ২১৫ কিমি, দেরাদুনের ২৪১ কিমি পূর্বে অবস্থান করছে ভূমিকম্পের উৎসস্থল।