যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে চর্চা শুরু হতেই নিজের কূটনৈতিক পাসপোর্টের সাহায্যে দেশ ছেড়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়ার নাতি তথা জেডিএস-এর সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না। এর প্রায় এক মাস পরে অবশেষে তিনি জার্মানির বার্লিন থেকে দেশে ফিরলেন। আর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভারতের মাটিতে পা রাখতেই রেভান্নাকে গ্রেফতার করা হল। রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল রাতে সোয়া ১টার দিকে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে নামে রেভান্নার বিমান। তিনি বিমান থেকে বেরিয়ে আসতেই এয়ারপোর্টেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে প্রজ্জ্বল রেভান্নাকে বেঙ্গালুরুতে সিআইডি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোট শেষ হওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন হাসানের সাংসদ। এরপর তাঁকে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, রেভান্নার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের প্রক্রিয়াও শুর হয়েছে। এহেন প্রজ্জ্বলকে গতাল রাতে হুডি পরা অবস্থায় বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা যায়। এদিকে পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার পরে বেঙ্গালুরুর সিআইডি অফিসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এদিকে বিমানবন্দরে রেভান্নাকে অন্য পথ দিয়ে বের করে আনা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, রেভান্নার সুরক্ষার জন্যেই তা করা হয়েছিল। এদিকে এই সময় বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে তাঁর দু'টি স্যুটকেস বাজেয়াপ্ত করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল।
এর আগে প্রজ্জ্বল রেভান্নাকে যৌন কেলেঙ্কারি কাণ্ডে শোকজ নোটিশ ধরিয়েছিল জেডিএস। পাশাপাশি তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। উল্লেখ্য, প্রজ্জ্বলকে এবারও হাসান থেকে প্রার্থী করেছিল জেডিএস। রেভান্নার হয়ে প্রচার করে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী নিজেই। এরই মাঝে জেডিএস প্রার্থীর যৌন কেলেঙ্কারির ভিডিয়ো ফাঁস হয়ে যায়। একাধিক মহিলার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রজ্জ্বলের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার। আর এই সবের মাঝেই প্রজ্জ্বল দেশ ছেড়ে জার্মানি চলে যায়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতা মহিলা দাবি করেন, তাঁকে ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বহুবার যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল। নির্যাতিতার অভিযোগ, তিনি কাজে যোগ দেওয়ার তিন মাস পরে প্রজ্জ্বল রেভান্না তাঁকে তাঁর কোয়ার্টারে ডাকতেন। রেভান্নাদের বাড়িতে মোট ৬ জন মহিলা কর্মচারী ছিলেন। অভিযোগকারী নির্যাতিতার কথায়, 'যখনই প্রজ্জ্বল রেভান্না বাড়ি ফিরতেন আমরা ৬ মহিলা কর্মী তটস্থ হয়ে যেতাম। এমনকী বাড়ির পুরুষ কর্মচারীরাও আমাদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিতেন।' এরপর সেই নির্যাতিতা অভিযোগ করেন, যখনই এইচডি রেভান্নার স্ত্রী বাড়িতে থাতেন না, তখনই তিনি স্টোররুমে মহিলাদের ডাকতেন এবং যেখানে সেখানে হাত দিতেন। আবার এর বদলে তিনি সেই নির্যাতিতাদের হাতে ফল তুলে দিতেন। তখন তিনি মহিলা কর্মীদের শাড়ির পিম খুলে দিতেন এবং নানান ভাবে যৌন হেনস্থা করতেন। এদিকে অভিযোগকারী দাবি করেন, প্রজ্জ্বল রেভান্না তাঁর মেয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে দুর্ব্যবহার করেছিলেন। এই আবহে তাঁর মেয়ে প্রজ্জ্বলের ফোন নম্বর ব্লক করে দেয়।