ভারতীয় রাজনীতিতে এখন অন্যতম আলোচ্য নাম হল প্রশান্ত কিশোর। সেই প্রশান্ত কিশোর ২০২৪-এর লড়াইয়ে কোনদিকে? এই প্রশ্নে এখন সরগরম দিল্লির রাজনীতি। এই আবহে আজ দিল্লিতে দাঁড়িয়েই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন যে ভোটকুশলী হিসেবে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই আছেন। উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেস যোগ নিয়ে জোর জল্পনা চলছিল। দফায় দফায় পিকে বৈঠকও করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে। তবে শেষমেষ দুই তরফেই জানিয়ে দেওয়া হয় যে পিকে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন না। এর নেপথ্যে প্রশান্তের ‘পেশা’ বড় কারণ বলে মনে করেছিলেন অনেকেই।
এদিকে গত পুরভোটের পর থেকেই আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব তৈরি নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। আইপ্যাকের তরফে বারংবার দাবি করা হয়, প্রশান্ত কিশোর তাঁদের সংস্থার কেউ নন। তবে সেই দাবি প্রায় কেউই বিশ্বাস করেন না। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ নিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। তবে তৃণমূল, টিআরএস-এর মতো আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গ ত্যাগ করতে নারাজ ছিলেন ভোটকুশলী। এই আবহে কংগ্রেসও পিকের উপর ভরসা দেখাতে পারেনি। যার জেরে ফের প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে জল্পনা বাড়তে থাকে রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন: একযোগে দলবদল ২১ বিধায়কের! উত্তরপূর্বের রাজ্যে বড়সড় ফের বদলে নয়া সমীকরণ
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে বিজেপিকে হারাতে সাহায্য করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। একই সঙ্গে দক্ষিণে ডিএমকে-কেও জয় এনে দেয় পিকের সংস্থা। এরপর থেকেই পিকের মুখে বারংবার শোনা গিয়েছিল ২০২৪-এ বিজেপিকে হটানোর কথা। তবে তাঁর বিজেপি বধের ফর্মুলাতে রয়েছে তৃণমূল, টিআরএস, ডিএমকের মতো আঞ্চলিক দল। সঙ্গে রয়েছে কংগ্রেসও। যদিও কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে ছেদ পড়েছে সম্প্রতি। এই আবহে পিকে-র সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক বজায় রয়েছে বলে জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পাশাপাশি মমতা এদিন মেনে নেন যে, তৃণমূলের মধ্যে প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা নিয়ে মতপ্রার্থক্য ছিল। তবে তিনি বলেন, ‘দলের মধ্যে এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে প্রশান্ত কিশোর ভোটকুশলী হিসাবে দলের সঙ্গে কাজ করবেন।’
উল্লেখ্য ২১-এর বিধানসভা ভোটের পর থেকেই মেঘালয়, অসম, ত্রিপুরায় আইপ্যাক কাজ শুরু করে। কাজ করে গোয়াতেও। তবে গোয়াতে তৃণমূল সফল হয়নি। অপরদিকে ত্রিপুরাতে কিছুটা দাগ কাটতে পেরেছে ঘাসফুল শিবির। মেঘালয়ে কংগ্রেস ভাঙিয়ে তৃণমূল হয়ে উঠেছে প্রধান বিরোধী দল। অসমেও কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়েছে তৃণমূল। এই আবহে পিকের পরামর্শে তৃণমূল যেভাবে বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়েছে, তাতে স্বভাবতই ‘অসন্তুষ্ট’ কংগ্রেস। এদিকে পিকে-তৃণমূল সম্পর্কে এখনও ছেদ না পড়ায় জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী শক্তি একত্রিত হওয়ার ফর্মুলা কী হবে, তা নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি হল।