আবারও নিতে হবে বিপিএসসি (বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন)-এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এই দাবিতেই গত বৃহস্পতিবার থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন জন সুরজ পার্টির প্রধান প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে। পটনার গান্ধী ময়দানে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে চলছে এই ধরনা কর্মসূচি।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, একদা ভোটকুশলী হিসাবে সারা ভারতে পরিচিত প্রশান্ত কিশোরই হলেন প্রথম রাজনৈতিক নেতা, যাঁকে এই জায়গায় কোনও কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়েছে। অথচ, প্রত্যক্ষ রাজনীতির ময়দানে নেতা হিসাবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে সবেমাত্র।
তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, শুধুমাত্র প্রশান্ত কিশোর বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। কারণ, তাঁর অতীত ইতিহাস সকলেরই জানা। এমনটা দাবি করা হয় যে, তাঁর হাত ধরেই নাকি বহু রাজনৈতিক দল ভরাডুবির হাত থেকে বেঁচে দুরন্ত কামব্যাক করেছে। ফলত, তাঁকে নিয়ে বেশ সাবধানী বিহার সরকার।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, ইতিমধ্যেই নানা বয়সের মানুষ প্রশান্তের প্রতি সমর্থন জানাতে অনশনস্থলে গিয়ে জমায়েত করতে শুরু করেছেন। সেখানে তরুণদের পাশাপাশি প্রবীণদের উপস্থিতি অত্যন্ত লক্ষ্যণীয়।
এমন প্রেক্ষাপটে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ানোর নীল নকশা ইতিমধ্য়েই ছকে ফেলেছেন প্রশান্ত কিশোর! দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে - পিকে জানিয়েছেন, 'যদি রাজ্য সরকার পুনরায় বিপিএসসি-র প্রিলিমিনারি নেওয়ার দিনক্ষণ ঘোষণা না করে, তাহলে আমরা সরকারকে এই মাঠে (গান্ধী ময়দান) আগামী ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান করতে দেব না। আমরা এটা নিশ্চিত করব যাতে বিহারের প্রত্যেকটি ব্লক থেকে অন্তত ৫০০ ছাত্রছাত্রী এখানে এসে জমায়েত করেন!'
প্রশান্ত কিশোরকে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই আন্দোলন আর কেবলমাত্র বিপিএসসি দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। 'এই আন্দোলন আদতে আমলতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রদের সমবেত প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছে। যে আমলাতন্ত্র গত ১০ বছর ধরে একাধিক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ভুলভাবে পরিচালনা করেছে। সরকারের মনে হতেই পারে, এটা হয়তো আর পাঁচটা বিক্ষোভের মতোই একটি বিক্ষোভ। কিন্তু, সরকারের যদি এখনও ঘুম না ভাঙে, তাহলে এই বিক্ষোভই একটি অভ্যুত্থানে পরিণত হবে।'
প্রশান্তের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন বিহারের বর্তমান এনডিএ সরকার আসলে দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। সেই কারণেই তারা ছাত্রদের দাবি মেনে বিপিএসসি-র প্রিলিমিনারি পুনরায় নিতে ভয় পাচ্ছে।
প্রশান্ত বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি, এক-একটি আসন ৩০ লক্ষ থেকে ১.৫ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। যে রাজ্যে কনস্টেবল পদে চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে একজন প্রাক্তন ডিজিপি-র ভূমিকা তদন্তের আওতায় আসে, সেই রাজ্যে আপনি আর কীই বা আশা করতে পারেন?...'
প্রশান্ত আরও জানিয়েছেন, তাঁর দলের দাবি হল - 'গত ১০ বছরে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আয়োজিত যেসমস্ত পরীক্ষায় অনিয়ম বা প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অভিযোগ উঠেছে, তার সবকটির বিস্তারিত তদন্ত করতে হবে।'