ঢালাও নোট ছাপিয়ে গরীবদের মধ্যে বিলি করুন। আর কেউ নয়, করোনার জেরে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিতে এই প্রেসকিপশনই দিলেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ম্যাক্রোইকনমিক যেসব কারণের জন্য লাগামহীন ভাবে নোট ছাপানো হয় না, সেগুলি নিয়ে আপাতত চিন্তার প্রয়োজন নেই বলেই নোবেলজয়ীর আশ্বাস।
তিনি বলেন যে ভারতের মতো দেশের আপাতত ফিসক্যাল ডেফিজিট নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি নিয়ে ভাবা উচিত না। করোনার জেরে স্তব্ধ অর্থনীতির যে প্রভাব পড়বে সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের ওপর, এখন সেটা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন বলেন জানান অভিজিত।পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে ১৯২৯ সালের গ্লোবাল ডিপ্রেশনের থেকেও হাল খারাপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এমআইটির অধ্যাপক বণিকসংস্থা ফিকির একটি আলোচনাসভায় এই কথা বলেন বলে জানিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা। আলোচনাসভায় ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও আরেক নোবলে জয়ী এস্থার ডাফলো।
ডাফলো বলেন যে ২০০৮-এর মন্দা নয়, এবারের ধাক্কা অনেকটা ১৯২৯-এর সেই গ্রেট ডিপ্রেসনের মতো হবে। সেখানে সরকারগুলি কীভাবে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে পরিস্থিতি। অভিজিত একই সুরে বলেন যে হাত খুলে খরচা করা দরকার সরকারদের।
টাকা ছাপিয়ে গরীব দেওয়া উচিত বলে অভিমত তাঁর। তিনি বলেন যে নির্মাণ শিল্প, ট্রাক চালক ও লজিস্টিক্সের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক অধিকাংশই পূর্ব ভারতের। এদের অবস্থা খুব খারাপ বলে জানান তিনি।
টাকা প্রচুর ছাপালে ডলারের তুলনায় আরও তা দুর্বল হবে। একই সঙ্গে কমতে পারে ক্রেডিট রেটিং। কিন্তু সে সব নিয়ে পরে চিন্তা করা যেতে পারে, বলছেন নোবেলজয়ী। অপরিশোধিত তেলের দাম কম থাকায় টাকার দুর্বলতাটি অত বড় ফ্যাক্টর নয় বলেও মনে করেন তিনি।
করদাতাদের টাকায় ব্যাঙ্কগুলির যখন রিক্যাপিটিলাইজেশন হয়, তখন প্রয়োজনের সময় তাদেরও আম আদমির পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে তিনি মনে করেন। এই কারণে তিন মাসের জন্য সব সুদ মুকুব করার দাবি জানান তিনি।
অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় করোনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত রাজ্যসরকারের এক বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য। বিভিন্ন পরামর্শ এই পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তিনি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে টাকা ছাপানোর দায়িত্ব রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। নোবেল লরিয়েটের এই পরামর্শ তারা মানেন কিনা, সেটা দেখার।