শিবসেনা বনাম বিজেপি সংঘাত ভারতীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন নতুন সমীকরণের দিক তুলে ধরেছে। এদিকে, এমন এক প্রেক্ষাপটে এবার শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে লেখা এক চিঠিতে তুলে ধরেছেন জুভেনাইল জাস্টিস অ্যামেডমেন্ট অ্যাক্ট ঘিরে কয়েকটি দিক। প্রিয়ঙ্কার দাবি, এই আইনে সদ্য যে সংস্কার আনা হয়েছে, তাতে কিশোরদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে।
২০২১ সালের জুলাই মাসে পাশ হয়েছে, জুভেনাইল জাস্টিস (কেয়াল অ্যান্ড প্রোটেকশন অফ চিল্ড্রেন) অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ২০২১। সেই আইনের আওতায় 'উপলব্ধিযোগ্য' ও 'উপলব্ধির অযোগ্য' এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে অপরাধকে। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রেই এই ভাগ রয়েছে। গুরুতর অপরাধ বলতে বোঝায়, যে অপরাধের কারণে কারাবাস হত পারে সর্বোচ্চ ৩ বছরের, আর সর্বনিম্ন ৭ বছরের জন্য। আর উপলব্ধির অযোগ্য ক্ষেত্রে থাকবে, এমন কিছু অপরাধ, যা নাবালকের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি ব্যতীত এফআইআরের আওতায় অভিযোগ স্বরূপ দায়ের করা যাবে না। এক্ষেত্রে উপলব্ধির অযোগ্য অপরাধ নিয়েই বক্তব্য রেখেছেন শিবসেনার সাংসদ। শিবসেনা সাংসদ কেন্দ্রীয় শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রকের মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, এই উপলব্ধির অযোগ্য ক্ষেত্রে যে নতুন সংস্কার আনা হয়েছে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যামেডমেন্ট অ্যাক্ট ২০২১-এ তা মূলত অপরাধীকে নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে।
বিজেপিকে একহাত নিয়ে প্রিয়ঙ্কা লিখেছেন, 'একদিকে বিজেপি বলছে, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, আর আরেকদিকে, এটি একটি সংশোধনী এনেছে যা নিশ্চিত করবে যে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ অনুমতি ছাড়া নাবালকদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধে কোনো এফআইআর নথিভুক্ত করা হবে না।' তিনি চিঠিতে লেখেন, 'আইনের এই সাম্প্রতিক সংশোধনী শিশুদের উপর একটি ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে কারণ এটি অপরাধীদের রক্ষা করবে যারা শিশুদের ভিক্ষা, শ্রম এবং মাদক চোরাচালানের জন্য নিয়োগ ও শোষণ করে।' প্রিয়ঙ্কার দাবি, এরফলে কোনও গুরুতর অপরাধ করলেও নাবালকদের বিরুদ্ধে দায়ের হবে না কোনও মামলা। প্রিয়ঙ্কা দাবি করেন, এই সংস্কারের ভুলগুলি যাতে শোধরানো হয়। প্রিয়ঙ্কা লেখেন, অপরাধের কমতি যেখানে লক্ষ্য সেখানে অপরাধ বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে এমন সংস্কার এনে। শিবসেনা সাংসদ দাবি করেন, এই ইস্যুতে এফআইআর করতে না দেওয়ার অর্থ হল মূলত অপরাধের সংখ্যার নথিকরণের কমতি আনা। যা 'সম্পূর্ণভাবে ভারতের সংবিধানের প্রতি অন্যায়' বলে বর্ণনা করেছেন প্রিয়ঙ্কা।