গতকাল সুপ্রিম নির্দেশের পর কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এফআইআর করা হয়েছে। এরপরই নাকি আন্দোলনরত ভারতীয় কুস্তিগীরদের সঙ্গে বাজে আচরণ করছে দিল্লি পুলিশ। এই আবহে রাতেই একটি ভিডিয়ো বার্তায় বজরং পুনিয়া দাবি করেন যে তাদের ধরনাস্থলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। যে তাঁদের খাবার ও জল, তাকে পুলিশ মারধর করে এবং ধরনাস্থলে আসতে বাধা দেয়। এই সবের মাঝেই আজ সকাল সকাল কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী উপস্থিত হন কুস্তিগীরদের ধরনাস্থলে। বজরং পুনিয়া, ভিনেশ ফোগাটদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, 'যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাতে কী আছে তা কেউ জানে না। কেন তারা তা দেখাচ্ছে না? এই কুস্তিগীররা যখন পদক জেতেন, আমরা সবাই টুইট করি এবং গর্বিত বোধ করি। কিন্তু আজ তাঁরা রাস্তায় বসে। তাঁরা বিচার পাচ্ছেন না। এই সমস্ত মহিলা কুস্তিগীররা এই পর্যায়ে আসতে অনেক সংগ্রাম করেছেন। আর আমি বুঝতে পারছি না সরকার কেন ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংকে বাঁচাচ্ছে?' কংগ্রেস নেত্রী এরপর প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগে আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমার কোনও প্রত্যাশা নেই। কারণ তিনি যদি এই কুস্তিগীরদের নিয়ে চিন্তিত হতেন, তাহলে কেন তিনি এখনও তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি বা দেখা করেননি। সরকার কেন তাঁকে বাঁচাতে চাইছে?’
দেশের মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে ফেডারেশনেরই প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে। সেই আবহে ব্রিজ ভূষণের গ্রেফতারির দাবিতে যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেছেন অলিম্পিক পদকজয়ী বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদকজয়ী ভিনেশ ফোগাটরা। গতকালই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে অবশেষে এফআইআর করেছে অমিত শাহের পুলিশ। তবে এরই মধ্যে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বজরং পুনিয়া। কুস্তিগীরের অভিযোগ, দিল্লি পুলিশ যন্তর মন্তরের ধরনাস্থলের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করেছে। শুধু তাই নয়, ধরনাস্থলে জল এবং খাবার নিয়ে যেতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ধরনা স্থানের চারপাশে ব্যারিকেড করে দিয়েছে।
এদিকে কুস্তিগীরদের সঙ্গে দিল্লি পুলিশের আচরণ প্রসঙ্গে টুইট করে তোপ দেগেছেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল। তিনি টুইটে লেখেন, 'প্রথমে ৬ দিন ধরে এফআইআর করা হল না। এখন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদীদের খাবার ও জল আটকে দেওয়া হচ্ছে। সম্ভবত সবচেয়ে অত্যাচারী শাসকও তার প্রতিপক্ষের সঙ্গে এমনটা করতেন না। তবে এটা আমাদের গণতন্ত্র, আর এরা আমাদের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন।'