অনির্দিষ্ট কাল ধরে যৌন মিলনের টোপ হিসেবে বিয়ের প্রতিশ্রুতিকে কখনও দায়ী করা যায় না। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের মামলায় এক ব্যক্তি ছাড় পাওয়ার রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এক মহিলার ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করে এই মন্তব্য করল দিল্লি হাই কোর্ট।
বিচারপতি বিভূ ভাকরু বলেন, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, যাতে দীর্ঘ সময় যাবৎ যৌন সংসর্গ জড়িত, সেখানে বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত হিসেবে মেনে নেওয়া অসম্ভব।
গত ১৫ ডিসেম্বর হাই কোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে, ‘শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের স্বার্থে নিগৃহীতাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে বোঝা যেতে পারে। তবে এই প্রতিশ্রুতিকে কখনই দীর্ঘ সময় ধরে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত থাকার টোপ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় না।’
২০১৫ল সালের ১৫ অগস্ট দিল্লির মালবিয়া নগর থানায় এক মহিলা অভিযোগ করেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ) ও ৪৪১৫ (প্রতারণা) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারীর অভিযোগ, গ্রেটার কৈলাস এলাকার এক বাড়িতে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করার সময় তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেন অভিযুক্ত ব্যক্তি, যাঁকে তিনি ২০০৮ সাল থেকে চিনতেন।
অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে নিয়ে পালান অভিযুক্ত। মহিলার অভিযোগ, এর পর নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে স্ত্রী হিসেবে তাঁকে রাখেন অভিযুক্ত। পরে অন্তঃস্বত্তা হলে জোর করে তাঁর গর্ভপাত করতেও বাধ্য করেন অভিযুক্ত, এমনই দাবি মহিলার।
জানা গিয়েছে, ২০১৩ সাল পর্যন্ত ফরিদাবাদে বাড়ি ভাড়া নিয়ে একত্রে ৬ মাস বসবাস করেন যুগল। তার পরে মহিলাকে ফেলে রেখে পঞ্জাবে নিজের গ্রামে ফিরে যান অভিযুক্ত ব্যক্তি। সেখানে গিয়ে তিনি অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেন বলে অভিযোগ নিগৃহীতার।
আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, মহিলা ও অভিযুক্তের মধ্যে সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সম্মতিতে যৌন সংসর্গের বিষয়টি বোঝা গিয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ধোপে টেকে না।
বিচারপতি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়ে যৌন সম্পর্ক তৈরিতে সম্মতি দেওয়ার ঘটনা দেখা যায়। যদিও সে সব ক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্কে আপত্তি থাকে অভিযোগকারীর। এমন ঘটনায় নিগৃহীতাকে শারীরিক ভাবে কাজে লাগানোর অভিযোগ মেনে নেওয়া হয়। এবং সেই সমস্ত ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র ধর্ষণের অভিযোগ গ্রহণযোগ্য প্রমাণিত হয়।