বাথরুমে গোপন ক্যামেরা থাকার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখালেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রীরা। রাতভর চলে ধরনা। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানও ওঠে। ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের। তাঁদের অভিযোগ, মহিলা হস্টেলের বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগানো আছে। সেই ভিডিয়ো ছেলেদের হস্টেলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর সেটার নেপথ্যে আছেন ওই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেরই ফাইনাল ইয়ারের এক ছাত্রী। গোপন ক্যামেরায় যে ভিডিয়ো তোলা হয়েছে, তা তিনিই ছেলেদের হস্টেলে বিক্রি করে দেন বলেও অভিযোগ ওঠে। যদিও প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রীর ল্যাপটপ থেকে সেরকম কোনও ভিডিয়ো পাওয়া যায়নি। বাথরুমে কোনও গোপন ক্যামেরাও মেলেনি। যদিও ছাত্রীদের অসন্তোষের মুখে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে ওই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রী সন্দেহপ্রকাশ করেন যে মেয়েদের হস্টেলের বাথরুমে গোপন ক্যামেরা রেখে দেওয়া হয়েছে। আর তারপরই কলেজ ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে সামিল হন ছাত্রীরা। ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছাত্রীদের সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'-র মতো স্লোগান দিতে থাকেন। ফাইনাল ইয়ারের ওই ছাত্রীকে মারধর করার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
'বাথরুম থেকে কোনও গোপন ক্যামেরা মেলেনি'
সেই খবর পেয়ে কলেজে পৌঁছায় পুলিশ। ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রীকে আটক করা হয়। তাঁর ল্যাপটপ এবং ফোন বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার আর গঙ্গাধর রাও জানিয়েছেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বাথরুম থেকে কোনও গোপন ক্যামেরা মেলেনি।
‘ছাত্রীদের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই’
পুলিশ সুপার বলেন, 'পড়ুয়া এবং কলেজের কর্মীদের উপস্থিতিতে ওই ছাত্রীর ল্যাপটপ, মোবাইল এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিকস গ্যাজেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কোনও ভিডিয়ো পাওয়া যায়নি। আমার মনে হয়, ছাত্রীদের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। বিস্তারিত তদন্ত চলছে।'
'তদন্তে গাফিলতি হলে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে'
যদিও ইতিমধ্যে সেই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। ঠিক কী হয়েছে, তা জানার জন্য মন্ত্রী এবং পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নারা লোকেশ বলেছেন, 'গোপন ক্যামেরা থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।'
সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। আর কেউ যদি তদন্তের ক্ষেত্রে গাফিলতি করেন, তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার। পড়ুয়াদের হেনস্থা এবং র্যাগিং রুখতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।