এতদিন কোনওক্রমে ফাটল লুকিয়ে রাখা হচ্ছিল। শনিবার একেবারে সামনে চলে এল ফাটল। কংগ্রেস হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে পঞ্জাবের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং জানালেন, গত দু'মাসে তিনবার পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হচ্ছে। পুরো বিষয়টিতে অপমানিতে বোধ করেছেন। সেই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়লেন।
শনিবার ‘অধিনায়কত্ব’ ছেড়ে দেন অমরিন্দর। বিকেল সাড়ে চারটের দিকে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন অমরিন্দরের পরিবারের কয়েকজন সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ বিধায়ক। রাজভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, 'আজ সকালেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সকালেই কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। গত দু'মাসে তৃতীয়বার এরকম ঘটনা (পরিষদীয় বৈঠক) ঘটল। বিধায়কদের দু'বার দিল্লিতে ডেকে নেওয়া হল। তৃতীয়বার বৈঠক করা হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে যে আমার উপর যেন সন্দেহ আছে। আমি চালাতে পারছি যেন। আমি অপমানিত বোধ করছি। যাঁর উপর ভরসা আছে, তাঁকে (মুখ্যমন্ত্রী) করে দিক হাইকমান্ড।'
তবে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন অমরিন্দর। তিনি জানান, ভবিষ্যতে রাজনীতির সুযোগ অবশ্যই থাকবে। বরাবরই থেকেছে। তিনি একা সিদ্ধান্ত নেবেন না। রাজনীতিতে ৫২ বছর হয়ে গিয়েছে। সাড়ে ন'বছর মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে ছিলেন। ঘনিষ্ঠ বিধায়ক এবং সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবেন। সূত্রের খবর, অমরিন্দরের সমর্থনে আছে কমপক্ষে ১৫ জন বিধায়ক।
কিন্তু যেভাবে বিধানসভা ভোটের আগে অমরিন্দরকে সরতে হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পুরোপুরি নিজেদের পায়ে কুড়ুল মেরেছে। যে বিধানসভা নির্বাচন কংগ্রেসের পক্ষে ‘সহজ’ ছিল, সেটা কঠিন করে ফেলা হল। বিধানসভা ভোটের চার মাস আগে সরকারের ভাবমূর্তি পালটানোও যাবে না। এখন যা পরিস্থিতি হল, তাতে কার্যত বিরোধীশূন্য অবস্থা থেকে বিরোধীদের সামনে সুযোগের দরজা খুলে দিল। যদিও অপর একটি অংশের বক্তব্য, অমরিন্দরের প্রশাসন এবং নেতৃ্ত্বে প্রচুর ফাঁকফোকর আছে। তাই অমরিন্দরকে সরিয়ে আখেরে কংগ্রেসের লাভ হবে। কারণ অমরিন্দরের নেতৃত্বে নিশ্চিতভাবে বিধানসভা নির্বাচনের হারের মুখ দেখতে হত কংগ্রেসকে।