বিষাক্ত মদে শতাধিকের মৃত্যুতে দোষীরা কোনও মতে ছাড় পাবে না। দলের ভিতরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরে মঙ্গলবার এই ঘোষণা করলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং।
সম্প্রতি বিষাক্ত মদের জেরে পঞ্জাবের তর্ন তারন, অমৃতসর ও বাটালায় ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অবৈধ মদ মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী অপ ও বিজেপি নেতারা। এমনকি কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং প্রশাসনের বিরুদ্ধে আঙুল উঠতে শুরু করেছে।
ঘটনায় বিচারপতি পর্যায়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং জানিয়েছেন, দোষীরা কোনও মতে পার পাবে না। মঙ্গলবার তিনি টুইটারে লেখেন, ‘অবৈধ মদ্যপানে মৃত্যু একই সঙ্গে শোক ও হতাশাজনক। ঘটনায় জড়িত পদমর্যাদা ও ক্ষমতা নির্বিশেষে দায়িত্বে থাকা সবাইকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও শুল্ক দফতরকে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না এবং দোষীদের বিচার করে শাস্তি দেওয়া হবে।’
তাঁর আগেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দোষীদের আড়াল করার অভিযোগ তোলেন কংগ্রেসের রাজ্য সভার সাংসদ সামশের ডাল্লো। সংবাদসংস্থা এএআই-কে তিনি জানান, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা, পঞ্জাবে এমন আগে ঘটেনি। সরকার ও পুলিশের নজর এড়িয়ে এমন ঘটনা অসম্ভব। এই কারণেই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারফিউয়ের মধ্যে মদ তৈরির কাঁচামাল কোথা থেকে আমদানি হল?’
ডাল্লো আরও জানিয়েছেন যে, রাজ্য প্রশাসন ও দিল্লিতে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বকে তিনি পঞ্জাবে অবৈধ মদ ব্যবসার রমরমার কথা জানিয়ে সতর্ক করা সত্ত্বেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার জেরে ডাল্লো ছাড়াও পঞ্জাব সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন রাজ্যের আর এক কংগ্রেস নেতা প্রতাপ সিং বাজওয়া। ক্ষিপ্ত অমরিন্দর সিং দুই দলীয় নেতার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের নালিশ জানিয়ে হাইকম্যান্ডের কাছে তাঁদের শাস্তি দাবি করেছেন।
বিষাক্ত মদে মৃত্যুতে এ পর্যন্ত নদুই ব্যবসায়ী-সহ মোট ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাোশি, বিষাক্ত মদ তৈরির জন্য তিন ড্রাম সন্দেহজনক তরল জোগানোর কারণে খোঁজা হচ্ছে হরিয়ানার এক রং ব্যবসায়ীকে। এ ছাড়া, লুধিয়ানায় রঙের দোকানের মালিক রাজেশ জোশির সন্ধানেও তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মদে বিষক্রিয়ার পিছনে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
শুধু তাই নয়, সরকার নিযুক্ত বিচারপতি পর্যায়ের অনুসন্ধানে শনিবার পঞ্জাব পুলিশের ৬ কর্মীর বিরুদ্ধেও দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। তবে ঘটনায় সিবিআই তদন্তের যে দাবি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, তা আমল দেয়নি পঞ্জাব সরকার।