খড় পোড়ানো বন্ধ করতে গিয়ে আটক সরকারি আধিকারিক। পঞ্জাবের ফরিদকোট জেলার জীবনওয়ালা গ্রামে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজস্ব দফতরের ওই কর্তা। এদিকে তাঁকে রীতিমতো ২৪ ঘণ্টা আটক করে রাখেন গ্রামবাসীরা। খড় পোড়ালে জরিমানা হবে না, এই শর্তে লিখিত আশ্বাস দিলে, তবেই তাঁকে ছাড়া হবে, দাবি তাঁদের।
স্থানীয় তহসিলদার এবং আইএএস আধিকারিকরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তাঁরা কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মিটমাটের চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই আধিকারিককে ছাড়তে রাজি হননি কৃষকরা। আরও পড়ুন: এক বছরে ন্যাড়াপোড়ার সমাধান! দিল্লির দূষণ রুখতে ভিন্ন উপায় চাষের ভাবনায় কেজরিরা
ফরিদকোটের তহসিলদার অনিল কুমার বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও খড় পোড়ানো হচ্ছিল। আমাদের নোডাল অফিসার সেই দিয়েছেন। আর সেই কারণেই ওই আধিকারিক বিষয়টি সচক্ষে দেখতে এসেছিলেন। এদিকে গ্রামবাসীরা বিষয়টি জানতে পেরেই তাঁকে আটক করে রেখেছেন। আমরা কৃষকদের সঙ্গে কথা বলছি।'
এর আগে বৃহস্পতিবার, পঞ্জাবের ভাতিন্দা জেলার কৃষকরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁদের কথায়, খড় পোড়ানো বন্ধ করতে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ খড় কীভাবে সাফ করা হবে ও মাঠ থেকে সরানো হবে? সেই বিকল্পের ব্যবস্থা করেননি মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সরকার। তা না করেই খড় পোড়ানোর জন্য জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতে খড় পোড়াতে বাধা দিতে আসা যে কোনও সরকারি আধিকারিককে আটক করে রাখবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা।
প্রতি বছর অক্টোবর মাসের শেষ থেকে খড় পোড়ানো শুরু হয়। ফলন তুলে নেওয়ার পরে জমির অবশিষ্ট খড়ের গাদা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আর সেই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায়। হরিয়ানা এবং পঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এভাবেই খড় পোড়ানো হয়।
পঞ্জাবে বার্ষিক ২০ মিলিয়ন টন ধানের খড় উৎপন্ন হয়। পরবর্তী মরসুমের ফসলের জন্য মাঠ পরিষ্কার করতে এই বিপুল পরিমাণ খড়ে আগুন ধরিয়ে দেন কৃষকরা। এই ধোঁয়াই বায়ু প্রবাহের সঙ্গে উড়ে যায় উত্তর-পূর্ব দিকে। দিল্লি, নয়ডার মতো শহরে তীব্র ধোঁয়াশার সমস্যা তৈরি হয়। দিনের বেলাই বিকেলের মতো অন্ধকার হয়ে আসে। এছাড়া শ্বাসকষ্ট, কাশি, চোখ জ্বালার মতো সমস্যার সম্মুখীন হন উত্তর ভারতের বিভিন্ন স্থানের বাসিন্দারা। আরও পড়ুন: Delhi Air Pollution: ভয়াবহ বায়ু দুষণ দিল্লিতে, আগামী সপ্তাহে শুনানি শীর্ষ আদালতে
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পঞ্জাবে খড় পোড়ানোর সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'এই ধোঁয়া শুধু দিল্লিতেই নয়, সমগ্র উত্তর ভারতেই ছড়িয়ে পড়ছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে এগিয়ে আসতে হবে। সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। বায়ু দূষণ এখন গোটা উত্তর ভারতের সমস্যা। শুধুমাত্র AAP, দিল্লি সরকার বা পঞ্জাব সরকার এর জন্য দায়ী নয়। ফলে দোষারোপ করে কিছু হবে না। এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। আমি স্বীকার করছি যে পঞ্জাবে এখনও খড় পোড়ানো হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় তা অনেকটাই কম।'