মোহালিতে অপহৃত এবং নিহত তরুণীর শেষকৃত্য়ের অনুষ্ঠানের আগে এক মন ভার করা পরিস্থিতির সাক্ষী থাকল গোটা এলাকা। ২৩ বছরের ওই তরুণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার আগে শনিবার (১৫ মার্চ, ২০২৫) একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়। সেই মিছিলে অংশ নেন নিহত তরুণীর পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁদের সকলের হাতেই প্রতিবাদ ও নিহত তরুণীর প্রতি ভালোবাসার চিহ্ন স্বরূপ ছিল গোলাপ ফুল! মিছিলে অংশগ্রহণকারী সকলেরই দাবি ছিল একটাই - যে বা যারা তরুণীর এই অবস্থা করেছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে এবং কঠোরতম শাস্তি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ মোহালির বাদল কলোনি থেকে ওই তরুণীকে অপহরণ করা হয়। তিনি পাঁচকুলার একটি তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে কর্মরত ছিলেন। সেই ঘটনার তিনদিন পর একটি নর্দমা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিন ওই তরুণীর দেহ ডেরাবাস্সি হাসপাতাল থেকে এলাকায় নিয়ে আসা হতেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা। জিরাকপুরে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। অসংখ্য মানুষ সেই আয়োজনে সামিল হন।
এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ওই তরুণীকে চারজন যুবক অপহরণ করেছিল। তাদের মধ্যে একজন বেশ কিছু দিন ধরে মেয়েটিকে হেনস্থা ও বিরক্ত করছিল। ঘটনার দিনই মেয়েটির বাবা পুলিশকে সব জানান এবং লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু, পুলিশ ওই তরুণীর লোকেশনই শনাক্ত করতে পারেনি।
এদিকে, শনিবার এসএসপি দীপক পরীক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনের মধ্য়ে বাকি তিনজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হল - সুলতান মহম্মদ, রাজ কুমার এবং আমনদীপ। তাদের বিহার-নেপাল সীমান্ত থেকে পাকড়াও করা হয়। এর আগেই আরও এক অভিযুক্ত মোহিত কুমারকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেইসঙ্গে, অপহরণ কাণ্ডে ব্যবহৃত গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবি তুলেছেন নিহত তরুণীর পরিবারের সদস্যরা। মৃতার এক আত্মীয় বলেন, 'আমরা আমাদের মেয়ের জন্য সুবিচার চাই। যারা ওর খুনের জন্য দায়ী, তাদের সকলের বিরুদ্ধে পুলিশকে কঠোরতম পদক্ষেপ করতে হবে। যাতে এই ধরনের নৃশংস ঘটনা আর কখনও না ঘটে।'
ডেরাবাস্সির বিধায়ক কুলজিৎ সিং রণধাওয়া এদিন তরুণীর শেষকৃত্যে হাজির হন। তিনি বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং এটা পঞ্জাব পুলিশের দিকে একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
বিধায়ক বলনে, 'এই ধরনের অপরাধ কখনই সহ্য করা যায় না। দোষীদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। যদি পুলিশের তরফেও কোনও গাফিলতি ধরা পড়ে, তাহলেও ক্ষমা করা হবে না। দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দিয়ে নিদর্শন তৈরি করা হবে।'