'বেশি দামে' বেসরকারি হাসপাতালে টিকা সরবরাহ নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ বাড়ছিল। ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে বেসরকারি টিকার সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিল পঞ্জাব সরকার।
শুক্রবার পঞ্জাব সরকারের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, বেসরকারি হাসপাতালের মাধ্যমে ১৮-৪৪ বয়সিদের টিকাকরণের বিষয়টি 'সঠিকভাবে' নেওয়া হয়নি। তাই সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির কাছে রাজ্য সরকারের দেওয়া যে পরিমাণ টিকার ডোজ পড়ে আছে, তাও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, এখনও পর্যন্ত যে পরিমাণ ডোজ ব্যবহৃত করা হয়েছে, তা রাজ্য সরকারকে ফিরিয়ে দিতে হবে। কীভাবে তা করতে হবে, তাও জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালগুলি প্রস্তুতকারী সংস্থার থেকে সরাসরি প্রতিষেধক পেলে রাজ্যের বকেয়া টিকার ডোজ ফিরিয়ে দিতে হবে। সেইসঙ্গে রাজ্যের কাছে যে পরিমাণ টাকা জমা রেখেছিল, তাও ফিরিয়ে দেওয়া হবে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা দাবি করেন, পুরো রাজ্য করোনায় ধুঁকছে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে টিকাকরণ হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার উপরও জোর দেয়নি রাজ্য সরকার। তার ফলে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু তা নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোল নেই। গত তিনদিন ধরে কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের প্রথমসারির নেতারা দিল্লিতে পড়ে আছেন। তাহলে রাজ্যের দিকে কে নজর দেবেন?
গত কয়েকদিন ধরে বিরোধীদের তরফে দাবি করা হয়, কম টাকায় টিকার ডোজ কিনে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে পঞ্জাব সরকার। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর অভিযোগ করেন, টিকা থেকেও মুনাফা লুটছে পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার। কীভাবে সেই কাজ 'হচ্ছে', সেই ব্যাখ্যাও দেন। দাবি করেন, ৪০০ টাকা দরে ১.৪০ লাখ কোভ্যাক্সিনের ডোজ কিনেছিল ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং সরকার। সেই টিকা আবার ২০ টির মতো বেসরকারি হাসপাতালকে ডোজপিছু ১,০০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। জাভড়েকর বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলি আবার সাধারণ মানুষকে ১,৫০০ টাকায় সেই ডোজ বিক্রি করছে।’
আগামী বছর পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের অন্দরে দ্বন্দ্ব থামাতে তিন সদস্যের প্যানেল গঠন করা হয়েছে। সেই প্যানেলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে এসেছেন অমরিন্দর। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের অন্দরেই একাংশের মনে অমরিন্দরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অমরিন্দরকে মুখ করে কয়েকজন বিধায়ক বিধানসভা ভোটে লড়তে রাজি নন। তা নিয়ে জাভড়েকর বলেন, ‘ওরা নিজেদের দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য পঞ্জাবের মানুষকে অবহেলা করছে। কংগ্রেস মারাত্মক পাপ করছে। অন্যদের জ্ঞান দেওয়ার আগে নিজেদের শাসিত রাজ্যে ঠিকভাবে কাজ হচ্ছে কিনা, সেদিকে দেখা উচিত রাহুল গান্ধীর।’