পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অতিথিশালা 'ভক্ত নিবাস'-এ ঘর 'বুক' করে দেওয়ার নামে সাইবার প্রতারণা! অভিযোগ, ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে শত-শত পুণ্যার্থী ও পর্যটকের টাকা লুট করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই অতিথিশালা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে - 'শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাসোসিয়েশন' (এসজেটিএ)। তাদের পক্ষ থেকেই এবার সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এসজেটিএ-র মুখ্য মন্দির প্রশাসক অনির্বাণ কুমার পধী এই তথ্য সামনে এনেছেন। সূত্রের দাবি, ভক্তদের লুট করার জন্য ভুয়ো ওয়েবসাইট খোলার পাশাপাশি প্রতারকরা ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খুলেছে। আমজনতাকে আর্থিক প্রতারণা করতে এই ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টগুলিই ব্যবহার করা হচ্ছে। পুণ্যার্থীরা বা পর্যটকরা ঘর বুক করার জন্য ভাড়ার টাকা পাঠালেই তা ওইসব ভুয়ো অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এই প্রেক্ষাপটে সাধারণের উদ্দেশে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন কেবলমাত্র বৈধ ওয়েবসাইট থেকেই ভক্ত নিবাসে থাকার জন্য ঘর ভাড়া করেন। সেই ওয়েবসাইটটি হল - www.shreejagannath.in ।
দ্য টেলিগ্রাফ অলাইন - এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, মন্দির কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় ক্রাইম ব্রাঞ্চের সাহায্য নিতে বাধ্য হয়েছে। তারা চাইছে ক্রাইম ব্রাঞ্চ এই বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ করুক। কারণ, এর আগে স্থানীয় থানাকে এই ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও তারা তাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভক্ত ও পুণ্যার্থীরা যাতে পুরীতে এসে থাকতে পারেন, তার জন্যই জগন্নাথ মন্দিরের পক্ষ থেকে পুরুষোত্তম ভক্ত নিবাস, নীলাদ্রি ভক্ত নিবাস, শ্রী গুন্ডিচা ভক্ত নিবাস এবং নীলাচল ভক্ত নিবাস চালু করা হয়েছিল। এছাড়াও, এই এলাকায় থাকা-খাওয়ার জন্য প্রায় ৫০০ হোটেল, গেস্ট হাউস রয়েছে।
সূত্রের দাবি, এই সাইবার প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসার পর পুরীর হোটেল মালিকরাও পর্যটকদের সতর্ক করছেন। তাঁদের আবেদন, কোনওভাবেই ভালোভাবে খোঁজখবর না নিয়ে যেন পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা যেকোনও ওয়েবসাইট থেকে হোটেল বুকিং না করেন।
পুরী হোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি রামকৃষ্ণ দাস মহাপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'এই সাইবার প্রতারণা কেবলমাত্র ভক্ত নিবাসে ঘর নেওয়ার ক্ষেত্রেই ঘটছে এমনটা নয়। আমরাও এই সম্পর্কে জানি।'
রামকৃষ্ণ বলেন, 'বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষজন পুরীতে আসছেন। তাঁরা জানেন, তাঁরা ঘর বুক করেই এসেছেন। কিন্তু, এখানে আসার পর জানতে পারছেন, তাঁরা আসলে প্রতারিত হয়েছেন। কোনও ঘর তাঁদের নামে বুক করাই হয়নি! এমন ঘটনা প্রায় রোজই ঘটছে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করি যাতে এমন বিপাকে পড়া পর্যটকদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে তাঁদের সাহায্য করা যায়।'
প্রত্যেক মাসে এমন অন্তত ৭০-৮০টি ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন রামকৃষ্ণ।