অবিনাশ কুমার
বিহারের পূর্ণিয়া। একটা সময় ছিল মাদক আর জাল নোটের কারবারের জন্য কুখ্যাত। আর সেই পূর্ণিয়াই এখন সাইবার প্রতারণার হটস্পট হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ। আর তাদের সামাল দিতে এখন হিমসিম খাচ্ছে পুলিশ।
সম্প্রতি পূর্ণিয়া পুলিশ ১৭জনকে গ্রেফতার করেছিল। কসবা ও আমাউর থানায় চারটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এক পুলিশ আধিকারিকের মতে, একটা নতুন ধরনের প্রতারণাচক্রের সন্ধান মিলেছে। এই নয়া চক্রের লোকজন আঙুলের ছাপকেও নকল করে ফেলছে।
দেখা যাচ্ছে ওরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট, বায়োমেট্রিকস, আধার নম্বর ডাউনলোড করে ফেলছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, তেলেঙ্গানার সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র থেকে ওরা নানা তথ্য চুরি করছে। এমনটাই জানিয়েছেন এক পুলিশ আধিকারিক।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওরা ফিঙ্গারপ্রিন্টের ক্লোন করে ফেলছে। এরপর আধার এনাবেলড পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে একাধিক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছে। আর ওই তিনটি রাজ্যে সরকারি সাইটে রেজিস্ট্রি ও চুক্তিপত্র অবলীলায় ডাউনলোড করা যায়। সেই সুযোগটাই নিচ্ছে ওরা। কিন্তু বিহারে এটা করা যায় না। সেকারণে বিহারকে টার্গেট না করে ওরা অন্য তিন রাজ্যকে টার্গেট করছে।
পুলিশ টিম ইতিমধ্য়েই তাদের কাছ থেকে প্রচুর স্মার্টফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। তাদের কাছ থেকে এটিএম কার্ড, আঙুলের ছাপের নকল, আধার নম্বর, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ল্যাপটপ, কেমিক্যাল জাতীয় জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওরা প্রতারণার ইকোসিস্টেম চালাচ্ছে। ফিঙ্গার প্রিন্টকে ওরা প্রথমে বিশেষ পেপারে প্রিন্ট করে নিচ্ছে। এরপর পলিমার স্ট্যাম্প মেশিনে বিশেষ তাপমাত্রায়, কেমিক্যাল দিয়ে তার নকল বের করে ফেলছে। এরপর নকল সেই আঙুলের ছাপ দিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে।
সম্প্রতি হরিয়ানা পুলিশ দোমার বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে পূর্ণিয়া থেকে গ্রেফতার করেছিল। তার কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে এই হ্যাকিং আর ক্লোনিংয়ে কারসাজি তারা ঝাড়খণ্ডের জামতারা আর বাংলা থেকে শিখেছে। অনলাইন শপিংয়ের মাধ্যমে তারা প্রতারণার উপযোগী সামগ্রী কিনছে। যে ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ডের লিঙ্ক রয়েছে সেখানে হানা দিচ্ছে তারা।
অ্য়াডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ হেডকোয়ার্টার জিতেন্দ্র সিং গাঙ্গোয়ার জানিয়েছেন, একবার অনলাইন অ্যাকাউন্ট হয়ে গেলে তারা বায়োমেট্রিক ডিভাইস ব্যবহার করে, নকল আঙুলের ছাপ দিয়ে যেকোনও পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্য়মে টাকা তুলে নিচ্ছে।