রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বৃহস্পতিবার ৯৬ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। ১৯৫২ সালে সিংহাসনে বসার পরে ভারতে তিনটি রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছিলেন তিনি। প্রয়াত রানি তাঁর সফরের সময়ে ভারতে যে ‘আতিথেয়তা’ পেয়েছিলেন তার কথা বহু বার উল্লেখ করেছেন।
‘ভারতীয় জনগণের উষ্ণতা এবং আতিথেয়তা, এবং ভারতের সমৃদ্ধি এবং বৈচিত্র্য নিজেই আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে’, বলেছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
তাঁর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর ছিল ১৯৬১ সালে। কখন তিনি তাঁর স্বামী প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে মুম্বই, চেন্নাই এবং কলকাতা সফর করেন। এছাড়া আগ্রার তাজমহল পরিদর্শন করেন। তিনি নয়াদিল্লির রাজ ঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
দিল্লির রামলীলা ময়দানে একটি বিশাল জনসমাগমেও হাজির ছিলেন তিনি। রাজ-দম্পতি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. রাজেন্দ্র প্রসাদের আমন্ত্রণে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
তার দ্বিতীয় সফরের সময়, তিনি মাদার টেরেসাকে সম্মানসূচক ‘অর্ডার অব দ্য মেরিট’ প্রদান করেন। তার তৃতীয় এবং শেষ সফরটিও তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। কারণ তিনি প্রথমবারের মতো ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ‘ভয়ঙ্কর অধ্যায়’ বিশেষ করে জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যার কথা উল্লেখ করেছিলেন।
‘এটি কোনও গোপন বিষয় নয় যে, আমাদের অতীতে কিছু ভয়ঙ্কর অধ্যায় ছিল। জালিয়ানওয়ালাবাগ তেমনই একটি দুঃখজনক উদাহরণ’, রানি তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেছিলেন।
রানী এবং তাঁর স্বামী পরে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গণহত্যার স্থান পরিদর্শন করেন।
তাঁর রাজত্বকালে তিন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ইংল্যান্ডে তাঁর আতিথেয়তা গ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে ড. রাধাকৃষ্ণণ, ১৯৯০ সালে আর. ভেঙ্কটরমন এবং ২০০৯ সালে প্রতিভা পাটিল।
বাকিংহাম প্যালেসে রাষ্ট্রপতি পাটিলের জন্য রাষ্ট্রীয় ভোজসভার ভাষণে রানি বলেছিলেন, ‘ব্রিটেন এবং ভারতের একটি দীর্ঘ সম্মিলিত ইতিহাস রয়েছে, যা আজ এই নতুন শতাব্দীর জন্য উপযুক্ত একটি নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি বড় শক্তির উৎস।’
‘আমাদের নিজেদের নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ২ মিলিয়ন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁরা ব্রিটেনের সবচেয়ে গতিশীল এবং সফল সম্প্রদায়গুলির একটি। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক শক্তিশালী এবং গভীর ভিত্তির উপর নির্মিত।’ বলে তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি ২০১৫ এবং ২০১৮ সালে ব্রিটেন সফরের সময়ে তাঁদের বৈঠকগুলির কথাও স্মরণ করেন।
(পিটিআই ইনপুট সহ)