অযোধ্যা-বাবরি মসজিদ জমি বিবাদ নিয়ে ২০১৯ সালেই রায় দিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কয়েক দশকের সেই বিতর্ক অবশ্য মিটেও যেন মিটছে না। এবার এই মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়েই প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভি। তাঁর গুরুতর অভিযোগ, 'বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের চাপেই অযোধ্যা বিবাদ নিয়ে সেই রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।' উল্লেখ্য, সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে রামমন্দির মামলার বেঞ্চে থেকে প্রাক্তন সুপ্রিম বিচারপতি এস আবদুল নজির। এরপরই এই মন্তব্য করলেন কংগ্রেস নেতা। উল্লেখ্য, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজিরকে রাজ্যপাল করা নিয়ে কংগ্রেস ক্রমাগত তোপ দেগে চলেছে কংগ্রেস। এই আবহে হাত শিবিরের নেতা রশিদ আলভির এই অভিযোগ এই আক্রমণে নয়া মাত্রা যোগ করে দিল।
কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভি বলেন, 'অনেক মানুষই রাম জন্মভূমি ও বাবরি মসজিদ জমি বিবাম মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে প্রশ্নের চোখে দেখেন। মানুষজন বলছেন, কেন্দ্রের চাপেই শীর্ষ আদালত সেই রায় দিয়েছিল। সংবিধানের ৫০ নং ধারা অনুযায়ী, প্রশাসনের থেকে আলাদা ও স্বতন্ত্র হওয়া উচিত বিচার ব্যবস্থার।' কংগ্রেস নেতা আরও অভিযোগ করেন, দেশকে ধর্মের নামে দেশকে বিভাজিত করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজিরকে অন্ধ্রের রাজ্যপাল করার পর বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও কমে গিয়েছে। রশিদ বলেন, 'বিজেপি হিব্দু এবং মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তোষামদ তো তখন হয়, যখন একজনের থেকে অপরজনকে বেশি কিছু দেওয়া হয়। তবে ভারতের মুসলিমরা তো তাদের হকের দাবিও পাননি। এই আবহে জাস্টিস নজিরকে রাজ্যপাল করায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও কমে গিয়েছে।'
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র রাম জন্মভূমি বিবাদ মামলাই নয়, তিন তালাক মামলার সাংবিধানিক বেঞ্চেও ছিলেন জাস্টিস নজির। চলতি বছর ৪ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫৮ সালের ৫ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া বিচারপতি নজির ১৯৮৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভোকেট হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছিলেন কর্ণাটক হাই কোর্টে। ২০০৩ সালের ১২ মে তাঁকে কর্ণাটক হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। এরপর ধাপে ধাপে সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত হন তিনি। নিজের সাধারণ মানের জীবনযাপনের জন্য পরিচিত ছিলেন বিচারপতি নজির। বিচারপতির অবসর গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিচারপতি নজিরের পাসপোর্টও ছিল না। তিনি বিদেশে কোথাও ভ্রমণ করেননি ততদিন। তবে এবার এহেন সাধাসিধে জাস্টিস নজিরকে নিয়েই গুরুতর অভিযোগ করলেন কংগ্রেস নেতা।