নয়া কোনও মাপকাঠি তৈরি করবে না সুপ্রিম কোর্ট। সরকারি চাকরিতে তফসিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এমনটাই জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, চাকরিতে তফসিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীদের অপর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব নিয়ে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব সরকারের।
সরকারি চাকরিতে পদোন্নতিতে সংরক্ষণের জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রকে যে সংখ্যাতত্ত্বমূলক পরিসংখ্যান জোগাড় করতে হয়, তা তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, 'এম নাগরাজ (২০০৬) এবং জার্নেল সিং (২০১৮) মামলায় আদালতের রায় মোতাবেক হিসাবযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করতে বাধ্য সরকার। প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে প্রতিটি পদের শ্রেণিবিন্যাসের ভিত্তিতে সেই তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।'
সেইসঙ্গে তফসিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীদের দখলে কত শতাংশ পদ আছে, তা নির্ধারণের পর কেন্দ্রীয় সরকারকে অবশ্যই সংরক্ষণের নীতি পর্যালোচনার একটি সময়সীমা ঠিক করতে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘চাকরিতে তফসিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীদের পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি পর্যালোচনা করতে হবে। কতদিন ধরে পর্যালোচনা করা হবে, তার একটি যুক্তিগ্রাহ্য সময়সীমা থাকবে। সেই সময়সীমা কতটা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।’
গত ১০ বছরে সংরক্ষণ নীতি নিয়ে ১১ টি হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া একগুচ্ছ মামলার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্ট। মহারাষ্ট্র, বিহার, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের মতো রাজ্যে সেইসব রায় দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে আরকে সবহরওয়াল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে জনসংখ্যার অনুপাতে তফসিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীদের পদোন্নতির পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্র। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল দাবি করেছিলেন, তফসিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীদের পদোন্নতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্র এবং রাজ্যের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।
যদিও জেনারেল ক্যাটেগরি তথা অসংরক্ষিত পদের প্রার্থীদের আইনীজীবী রাজীব ধাওয়ান, মীনাক্ষি অরোরা, গোপাল শংকরানারায়ণ এবং কুমার পরিমল সওয়াল করেছিলেন, অনির্দিষ্ট সময় ধরে সংরক্ষণ চলতে পারে না। সংরক্ষণের যে সর্বোচ্চসীমা আছে, সেই স্তরে পৌঁছে গেলেই সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে।