কোটা বিরোধী আন্দোলনে এখন উত্তাল বাংলাদেশ। ছাত্র আন্দোলনের জেরে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত। তার মধ্যে ৫৭ জন বাংলাদেশের নাগরিককে জেলে পাঠাল সংযুক্ত আরব আমিরশাহী আদালত। এখানে বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে পড়েন। কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে ওখানেও প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। উপসাগরীয় দেশে অযাচিত ভাবে প্রতিবাদ–আন্দোলন দেখানোয় তাঁদের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
এই বিষয়টি নিয়ে ওই দেশে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের নাগরিকরা ওই দেশে পড়তে অথবা কর্মসূত্রে আছেন। তাঁরা হঠাৎ আরবের মাটিতে আন্দোলনে মেতে ওঠায় তা বরদাস্ত করা হয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর এক গবেষক ডেভিন কেন্নি বলেন, ‘এটা দ্বিতীয় গণ শুনানি হয়েছে এই মাসে। যেখানে বিপুল পরিমাণ মানুষকে জেলে পাঠানো হয়েছে। বিক্ষোভের কোনও কারণ না থাকা সত্ত্বেও প্রতিবাদ আন্দোলন করার জেরে এমন সাজা দেওয়া হয়েছে।’ সংবাদসংস্থা এএফপি–কে দেওয়া গবেষকের বক্তব্য, ‘এই দেশের মাটিতে জনসাধারণের এমন নিছক প্রতিবাদের উপর দমন করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, জড়িতদের খোঁজে মিলবে পুরষ্কার
এই আবহে আজ, সোমবার বাংলাদেশের এক ছাত্র নেতা ৪৮ ঘণ্টার প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। কোটা বিরোধী আন্দোলন এখানেও দেখা দিয়েছে। তবে তা বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি। বাংলাদেশে এই আন্দোলন রক্তক্ষয়ী হয়ে ওঠায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে কার্ফু জারি হয়েছে। শাটডাউন চলছে। এই পরিস্থিতিরই প্রতিবাদ করা হচ্ছিল আরবের মাটিতে। ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম গোটা ঘটনার প্রতিবাদের কারণ বলেছেন সংবাদসংস্থা এএফপি–কে। ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। তার জেরে রাস্তা অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, রাবার বুলেট, শতাধিক মৃত্যু, মাঝরাতে কার্ফু জারি, সেনা, সাঁজোয়া গাড়ির দাপাদাপি কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে গোটা বাংলাদেশকে।
আরও পড়ুন: দুরন্ত এক্সপ্রেসের চাকায় আগুন, প্রবল আতঙ্ক যাত্রীদের মধ্যে, দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেন
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের পুলিশ ৫০০ জনকে গ্রেফতার করেছে। এই গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে যখন একটু একটু করে স্বাভাবিকের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলেন, ‘হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় ৫৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকজন বিএনপি নেতারাও আছেন।’ নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিলে পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ। পাল্টা আন্দোলনকারীদের নেত্রী নুসরত তাবাস্সুম বিবিসিকে জানান, এত পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। তার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। কোটা বিরোধী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন পড়ুয়ারা।