রাফাল চুক্তির পর হিসাবে ভারতীয় সংস্থাকে 'উপহার'। মধ্যস্থতাকারী ভারতীয় সংস্থাকে ১.১ মিলিয়ন ইউরো ঘুষ দেয় সংস্থা। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৯ কোটি টাকা। ফরাসি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট উঠেছে এমনই অভিযোগ। আর এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই রাফাল চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হল কংগ্রেস।
মিডিয়াপার্ট নামে এক ফরাসি সংবাদমাধ্যম তিন দফায় এই রিপোর্ট পেশ করে। সেখানে এর ভারতীয় সংস্থাকে মধ্যস্থতায় সাহায্য করায় বিপুল অর্থ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অর্থাত্ প্রভাব খাটিয়ে কোনও তৃতীয় ব্যক্তি বিপুল অঙ্কের এই চুক্তিতে ভারত সরকারকে রাজি করিয়েছে বলে অভিযোগ।
এর প্রতিবাদে সরব হয়েছে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলের নেতারা। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালার কথায়, দাসোর এই ১.১ মিলিয়ন ইউরো 'গিফট টু ক্লায়েন্টস' হিসাবে দেখানো হয়েছে সংস্থার নথিতে। এটা কী আসলে মধ্যস্থতা করার জন্য অন্য কোনও ব্যক্তিকে দেওয়া কমিশন? নয় তো, কোনও দেশের সরকারকে তো এভাবে কমিশন দেওয়া যায় না।
দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তিতে কী করে কোনও তৃতীয় ব্যক্তি থাকতে পারেন, তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস মুখপাত্র। এর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেন তিনি।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত ২০১৮ সালে এই বিশেষ লেনদেন হয়। ফ্রান্সের দুর্নীতি দম শাখা দাসোর নথিতে এই গরমিল খুঁজে পায়। দেখা যায়, ক্রেতাকে দেওয়া উপহার হিসাবে কোটি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরেই প্রশ্ন করা হয় সংস্থাকে। রিপোর্ট অনুযায়ী এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি সংস্থা।
তবে, এই অভিযোগকে 'সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন' বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। রিপোর্টটির কোনও সত্যতা নেই বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর ব্যাখ্যা, ফ্রান্সের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংস্থার ব্যবসায়িক শত্রুতার ফলে এমন মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।
রবিশঙ্কর বলেন, 'সুপ্রিম কোর্ট এর তদন্তের আর্জি খারিজ করেছে। কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলও কোনও গরমিল খুঁজে পাননি। তাই এসব রিপোর্ট নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনও প্রশ্নই আসে না।'
তিনি আরও বলেন, '২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগেও কংগ্রেস এই ইস্যুতে অভিযোগ তুলেছিল। তারপর নির্বাচনে খুবই খারাপভাবে হেরেছিল।'
রাফাল চুক্তি অনুযায়ী ফরাসি বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা দাসোর থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনবে ভারত।