রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত মন্তব্য করেছিলেন যে রাম মন্দির তৈরির পরে ভারত সত্যিকারের স্বাধীনতা পেয়েছে। এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী মোহন ভাগবতের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘পুরো চমকাচ্ছে,প্যারিসের মতো দিল্লি!’ পচা খাল দেখিয়ে কাকে খোঁচা রাহুলের! Video
বুধবার ইন্দিরা ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় রাহুল গান্ধী বলেছেন, ভাগবতের মন্তব্য ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে দেশবাসীকে অসম্মান করেছে। তিনি বলেন, ‘মোহন ভাগবতের সাহস আছে প্রতি দুই বা তিন দিন পর জাতিকে জানানোর যে তিনি স্বাধীন আন্দোলন সম্পর্কে কী মনে করেন? তিনি সংবিধান সম্পর্কে কী মনে করেন? আসলে, তিনি গতকাল যা বলেছেন তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। কারণ তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী সংবিধান অবৈধ। ভারত ছাড়া অন্য কোনও দেশে এই ধরনের মন্তব্য করা হলে এতক্ষণে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নেওয়া হত। ভাগবতের বক্তব্য অনুযায়ী, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সবই অবৈধ।
রাহুলের বক্তব্য, ভাগবত যে বলেছেন ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পায়নি তা বলা প্রতিটি ভারতীয় ব্যক্তির জন্য অপমানজনক এবং এখন সময় এসেছে এই সব কথা শোনা বন্ধ করার। তিনি আরও কটাক্ষ করে বলেন, এই লোকেরা মনে করে যে তারা কেবল তোতাপাখি এবং চিৎকার করতে পারে।দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে রাহুল গান্ধী জানান, ভারতে বর্তমানে দুই চিন্তাধারার লড়াই চলছে। একটি হল কংগ্রেসের যা সংবিধানের মূল ভিত্তির উপর ভিত্তি করে। আর অন্যটি হল আরএসএসের বিচারধারা, যা সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর।
উল্লেখ্য, বুধবার একটি অনুষ্ঠানে ভাগবত এই মন্তব্য করেছিলেন। আরএসএস প্রধান প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা মনে করিয়ে ভারতের সংবিধানকে বিশ্বের সবচেয়ে ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার বিষয়ে প্রণবের কথাগুলি উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারত ব্রিটিশদের কাছ থেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করার পরে নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে একটি লিখিত সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু, সেটি সেই অনুযায়ী পরিচালিত হয়নি। ভারত প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা পেয়েছে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার পর।