নোটবন্দির অষ্টম বর্ষপূর্তিতে আবারও মোদী সরকারের সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী।
তাঁর মতে, অত্যন্ত অবিবেচকের মতো এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছিল তৎকালীন মোদী সরকার। এবং এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য যে পরিমাণ প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, সেই সময় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সেই প্রস্তুতিও নেওয়া হয়নি।
রাহুল গান্ধী এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের উপর রীতিমতো তোপ দেগে বলেন, নোটবন্দির ফলেই শিল্প ও বাণিজ্যে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম হয়েছে।
কারণ, নোটবন্দির ফলে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগপতিরা তাঁদের কাজ হারিয়েছেন। প্রসঙ্গত, শুক্রবারই নোটবন্দির আটবছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে আরও একবার এই পদক্ষেপের সমালোচনায় সরব হলেন রাহুল।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর বিজেপি নেতৃত্বাধীন তৎকালীন এনডিএ সরকার, সেই সময়কার বাজার চলতি ৫০০ ও ১,০০০ টাকার নোট বাতিল করার কথা ঘোষণা করে।
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি ছিল, কালো টাকার কারবার উপড়ে ফেলতে এবং দুর্নীতি রুখতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
পাশাপাশি, সরকারের তরফে এও দাবি করা হয়, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারতের আমজনতাও যাতে ডিজিট্যাল লেনেদেনে অভ্যস্থ হয়ে ওঠে, তার জন্যও নোটবন্দি দরকারি ছিল। এমনকী, এই ডিজিট্যাল লেনদেন আর্থিক দুর্নীতি ও প্রতারণায় রাশ টানবে বলেও সরকার আশা প্রকাশ করেছিল।
সরকারের যুক্তি ছিল, বাজারে নগদের লেনদেন কমানো সম্ভব হলে আর্থিক অপরাধে লাগাম টানা সহজ হবে। একইভাবে, কালো টাকাও উদ্ধার করা যাবে। যদিও বিরোধীরা কখনও এই যুক্তি মানেনি।
এদিন এই প্রসঙ্গে তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন রাহুল গান্ধী। তাতে নোটবন্দির মতো একটি পদক্ষেপ করার জন্য বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
রাহুল লেখেন, '৮ বছর আগে ভারতের যখন নোটবন্দি কার্যকর হয়েছিল, তখন যে পরিমাণ নগদ অর্থ ব্যবহার করা হত, এখন তার থেকেও বেশি নগদ ব্যবহার করা হয়। নোটবন্দির মাধ্যমে আদতে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রগুলিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে এবং তা একচেটিয়া কারবারের পথ প্রশস্থ করেছে।'
এর পাশাপাশি রাহুল আরও লিখেছেন, অত্যন্ত অবিবেচকের মতো এবং কোনও রকম সঠিক প্রস্তুতি ছাড়াই নোটবন্দি কার্যকর করা হয়েছিল। এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে এমন এক বাতাবরণ তৈরি হয়, যা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে তৈরি হওয়া এই ভীতি ভারতের অর্থনীতির উপরেও নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে বলে অভিযোগ করেন রাহুল।