তিনি কোনও দিনই বাণিজ্যিক প্রসারের বিরোধী ছিলেন না। তবে, তিনি নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার একচেটিয়া বাণিজ্যিক আধিপত্যের বিরোধী। বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স-এ পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় রাহুল গান্ধী যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তাতে তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি তাঁকে বাণিজ্যবিরোধী রাজনৈতিক নেতা হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। যা একেবারেই সঠিক নয়।
রাহুল গান্ধী এই প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানান, 'যে বাণিজ্যে মাত্র দু-পাঁচজনের আধিপত্য রয়েছে, সেই একচেটিয়া আধিপত্যের বিরোধী' তিনি।
রাহুলের কথায়, 'আমি একটি বিষয় একেবারে স্পষ্ট করে দিতে চাই। বিজেপিতে যাঁরা আমার বিরোধী রয়েছেন, তাঁরা আমাকে বাণিজ্যবিরোধী বলে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। আমি অন্তত মোটেও বাণিজ্যবিরোধী নই। কিন্তু, আমি বাণিজ্যে একচেটিয়া আধিপত্যের বিরোধী।'
রাহুল স্পষ্ট করে জানান, বাণিজ্যিক অগ্রগতির নামে যদি দু-পাঁচজনের হাতে সমস্ত বাজার তুলে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি তার বিরোধিতা করবেন।
এই প্রসঙ্গেই রাহুল মন্তব্য করেন, একজন ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট হিসাবে তিনি নিজের পেশাদার জীবন শুরু করেছিলেন। তাই, বাণিজ্যে সফল হওয়ার জন্য কী করা দরকার, সেটা তিনি ভালোই বোঝেন।
কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বলেন, 'আমি একজন ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট হিসাবে আমার কর্মজীবন শুরু করেছিলাম। এবং একটি সফল ব্যবসার জন্য কী ধরনের উপাদান প্রয়োজন, সেটা আমি জানি। তাই, আমি আবারও বলছি, আমি ব্যবসার বিরোধী নই। কিন্তু, একাধিপত্যের বিরোধী।'
এই প্রসঙ্গে নিজের সম্পর্কে রাহুলকে আরও বলতে শোনা যায়, আমি একজন 'নিয়োগপন্থী, ব্যবসাপন্থী, আবিষ্কারপন্থী এবং প্রতিযোগিতাপন্থী।... আমাদের অর্থনীতি তখনই পোক্ত হবে, যখন প্রত্যেকটি ব্যবসাকেই মুক্ত ও ন্যায্য পরিসর দেওয়া হবে।'
এই ইস্যুতে কথা বলার সময় আবারও একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন রাহুল। মোদী ব্রিগেডের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কিছু শিল্পপতি ও শিল্পগোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, রাহুল গান্ধী মাঝেমধ্য়েই দেশের বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে শিল্পপতি গৌতম আদানির সখ্য নিয়ে সরব হন ও সমালোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, একদিন আগেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে রাহুল গান্ধীর লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। সেখানে রাহুল লেখেন, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৫০ বছর আগে উঠে গেলেও, তারা যে ভীতি এদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিল, তা একচেটিয়া বাণিজ্যিক আধিপত্যের মাধ্যমে ফের ফিরে এসেছে।
রাহুল লেখেন, 'এটি (একচেটিয়া বাণিজ্য) আমাদের ব্যাঙ্ক, আমলাতন্ত্র এবং তথ্য সরসরাহকে প্রভাবিত করছে। আমরা অন্য কোনও দেশের কাছে নিজেদের স্বাধীনতা হারাইনি। বরং, আমরা একচেটিয়া বাণিজ্যিক আধিপত্যের কাছে আমাদের স্বাধীনতা হারিয়েছি। যা সবকিছুর উপরেই ছড়ি ঘোরাচ্ছে।'