গতকালই প্রকাশিত হয় উত্তরপ্রদেশ-পঞ্জাবসহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল। এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে পঞ্জাবে ছিল কংগ্রেসেরই সরকার। তবে সেই রাজ্য এবার হাতছাড়া হয়েছে। পাশাপাশি গোয়া, উত্তরাখণ্ডে জয়ের সম্ভাবনা দেখা দিলেও বিজেপির থেকে বহু পিছনে থেকেই এই রাজ্যগুলিতে হেরেছে কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশে তো মাত্র দুটি আসন পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় শতাব্দী প্রাচীন দলকে। উত্তর-পূর্বের মণিপুরেও বিজেপিকে কোনও চ্যালেঞ্জই ছুঁড়ে দিতে পারেনি হাত শিবির। এই নিয়ে গত দুই বছরে টানা ৯টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জয় অধরা কংগ্রেসের (তামিলনাড়ুতে ডিএমকের সঙ্গে জোট গড়ে জুনিয়র পার্টনার হয়ে ক্ষমতায় কংগ্রেস)। এই মুহূর্তে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে শুধুমাত্র দুটি রাজ্যে ক্ষমতায় আছে কংগ্রেস – রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়। এই পরিস্থিতিতে শীঘ্রই একজোট হয়ে পর্যালোচনায় বসতে পারে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এদিকে শুধু ভোটে হারা নয়, তাবড় তাবড় নেতাদেরও গত কয়েক বছরে হারাতে হয়েছে কংগ্রেসকে। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া থেকে শুরু করে জিতিন প্রসাদরা একে একে কংগ্রেসের হাত ছেড়েছে। হাতে তুলে নিয়েছেন পদ্ম। এদিকে গত প্রায় দুই বছর ধরে দলের কোনও পদে না থেকেও কার্যত দল চালাচ্ছেন রাহুল গান্ধী। গোয়ায় জোট গঠন হোক কি পঞ্জাবে মুখ্যমন্ত্রী বাছাই। শেষ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন রাগা। এবং তাঁর সেই সিদ্ধান্ত দলের পক্ষে লাভদায়ক হচ্ছে না একেবারেই। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীর সামনে জোড়া সংকট উপনীত হয়েছে। বিজেপির বিকল্প হিসেবে আঞ্চলিক দলগুলি আর কি রাহুলের নেতৃত্ব মানবেন? কংগ্রেসের অন্দরের বিক্ষুব্ধ ‘জি ২৩’ গোষ্ঠী কি ফের সরব হবে রাহুলের বিরুদ্ধে? এদিকে আগামী কয়েক মাসেই কংগ্রেসের নয়া প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়ার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে দলের অন্দরে রাহুলের কোণঠাসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক কংগ্রেস নেতার দাবি, রাহুল গান্ধীকে আগেই বলা হয়েছিল যে অমরিন্দর সিংকে যেভাবে পদ থেকে সরানো হয়েছিল তা দলের জন্য ভারী পড়বে। তাছাড়া দলের অন্দরে ‘সমীক্ষা’ চালিয়ে চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার সিদ্ধান্তও দলের বিরুদ্ধে যাবে। এই আবহে রাহুলের এই দুই সিদ্ধান্তের জেরে কংগ্রেস পঞ্জাব হাতছাড়া করে। উল্লেখ্য, দেশজুড়ে মোদী ঝড়ের মাঝেও অমরিন্দরের নেতৃত্বে কংগ্রেস পঞ্জাবে ভালো ফল করেছিল। সেই অমরিন্দরকে নির্বাচনের আগে এভাবে সরানো ভালো চোখে নেননি অনেকেই। এই আবহে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস নেতার সাফ কথা, ‘চাপ এখন রাহুল গান্ধীর উপরেই। তাঁকেই দলের উপর থেকে নিচ তলায় বদল আনতে হবে।’ অপর এক নেতার কথায়, ‘কংগ্রেসের এমন একজন সভাপতি প্রয়োজন, যিনি দলকে ভোট এনে দিতে পারবেন।’