পূর্ব লাদাখের প্য়াংগং লেকে অচলাবস্থা কাটাতে চিনের সঙ্গে ভারত যে বোঝাপড়া করেছে সেটাকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করল কংগ্রেস। দলের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন যে নিজেদের জমি চিনের কাছে দিয়ে দিচ্ছে ভারত। যদিও এই অভিযোগ মেনে নেয়নি প্রতিরক্ষামন্ত্রক। ভারত যে ১৯৬২-র সময় অনেক জমি হারিয়েছিল সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে মন্ত্রক বলেছে যে এরকম অভিযোগ বাস্তবে সেনার কৃতিত্বকে খাটো করা।
তবে সেই কথা মেনে নিতে চায় না কংগ্রেস। প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও মন্ত্রক একটি বড় কথা বলতে ভুলে গিয়েছে যে দক্ষিণ প্যাংগংয়ের সুবিধাজনক স্থান থেকে ভারত সরে যাবে কিন্তু বদলে কিছু পাবে না। তিনি বলেন যে প্রধানমন্ত্রীকে বলব লুকোছাপা না করে সত্যিটা বলতে। প্রতিরক্ষামন্ত্রক গালওয়ান শহিদদের স্মৃতিকে অপমান করছে বলে কংগ্রেসের দাবি। এর আগে রাহুল গান্ধী বলেন যে রাজনাথ কেন বক্তব্য রাখলেন, মোদী কোথায় ছিলেন। তিনি কেন এটা চিনকে জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন না, প্রশ্ন করেন রাহুল। কেন প্যাংগংয়ে ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৩-এ ভারত চলে এল, তাহলে কি জমি দিয়ে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন করেন তিনি। কেন কৈলাস রেঞ্জ যেটা দখল করেছিল ভারত, সেটা থেকে সৈনিকরা পিছু হটবে, প্রশ্ন তোলেন রাহুল। কবে ডেপসাং, গোগরা, হট স্প্রিং থেকে চিনা সেনা যাবে, সরকারকে কোণঠাসা করতে জিজ্ঞেস করেন রাহুল।
তিনি বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেশের জমি রক্ষা করা কিন্তু সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন মোদী। রাহুলের মতে কৈলাস দখল করে ভারতের হাতে যে তাসটি ছিল সেটি এখন মোদী দিয়ে দিচ্ছেন। অন্যদিকে দেপসাং, গোগরাতে এখনও বসে আছে চিন। তাঁর মতে এটা সম্পূর্ণ ভীরুতা। চিনের কাছে নিজেদের জমি দিয়ে দেওয়া।
তবে রাহুলের এই কথার পর শুধু বিজেপি সভাপতি নড্ডা নয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রকও প্রতিবাদ করে। ১৯৬২ থেকে যে ৪৩ হাজার কিলোমিটার চিন দখল করে আছে, সেই কথাও তারা মনে করিয়ে দেয়। ভারতের স্থায়ী ছাউনি ফিঙ্গার ৩-এ তাই সেখানে ফিরে যাওয়া হচ্ছে। ভারতের হিসেব অনুযায়ী এলএসি ফিঙ্গার ৮ দিয়ে যায় ও সেখান অবধি টহল করতে যাওয়ার অধিকার ভারত হারায়নি বলেই জানানো হয়েছে। প্যাংগংয়ে সমস্যা মিটলেই গোগরা ইত্যাদি নিয়ে কথা শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু সেই কথা মানতে নারাজ কংগ্রেস। তাদের মতে ফিঙ্গার ৪ থেকে ৩-এ ফিরে যাওয়া ভারতের অখণ্ডতার ওপর একটি বড় হানা।