উত্তর কেরলের কোঝিকোড়ে এশিয়ানেট নিউজ চ্যানেলের অফিসে পুলিশের অভিযানকে কেন্দ্র করে তুমুল শোরগোল কেরল বিধানসভায়। সোমবার কেরল বিধানসভায় এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে যায়। পরবর্তীকে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। স্পিকার এএন শামশীর মুলতুবি প্রস্তাবের অনুমতি দেননি।
কংগ্রেস বিধায়ক পিসি বিষ্ণুনাথ জানিয়েছেন, এভাবে সংবাদ মাধ্যমের অফিসে হানা দেওয়ার ঘটনা একেবারে পরিকল্পিত ও কাউকে টার্গেট করার জন্য় করা হচ্ছে। আসলে কান্নুরে শাসকদলের নানা কর্মকান্ড ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল। একাধিক স্টোরি এনিয়ে তৈরি হয়েছিল। তারপরই ওই অফিসকে নিশানা করে অভিযান চালানো হয়েছে। কংগ্রেস বিধায়কের দাবি, এভাবে মিডিয়া অফিসের অভিযানের ঘটনা আগে শোনা যায়নি। আসলে এটা কিছুই নয়, মিডিয়ার গলা চেপে ধরার জন্য, তাদের কণ্ঠরোধ করার জন্য় এসব করা হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ করার এটা একটা নমুনা। আর যারা এতদিন বিবিসি অফিসে আয়কর সার্ভে নিয়ে চোখের জল ফেলতেন তারা এখন বেমালুম চুপ করে রয়েছেন।
এদিকে রবিবার কোঝিকোড়ে পুলিশ একটি ইনস্পেকশন করেছিল সংবাদমাধ্যমের অফিসে। সিপিএমের বিধায়ক পিভি আনওয়ারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এই অভিযান চালায়। গত নভেম্বর মাসে নারকোটিকস ইজ এ ডার্টি বিজনেস শীর্ষক একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করা হয়েছিল। সেখানে একটি ভুয়ো সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছিল বলে সিপিএমের বিধায়কের অভিযোগ। গত ১০ নভেম্বর সেই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হয়েছিল। সেখানে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী অভিযোগ করেছিলেন সিন্থেটিক ড্রাগ প্রয়োগ করে তাকে হেনস্থা করা হয়েছিল। বিধায়কের দাবি, পুরো ভুয়ো খবর ছিল ওটা। তবে মেয়েটির বাবা ও চ্যানেল কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন।
তবে কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি এটা কোনও রেইড নয়, কোনও অভিযান নয়। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে সেটি নিয়ে বয়ান নেওয়ার জন্য় ওই অফিসে গিয়েছিল। একজন নাবালিকাকে কাজে লাগিয়ে কোনও খবর সম্প্রচার করাটা সংবাদমাধ্যমের নীতির মধ্যে পড়ে না। সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার নাম করে কোনও অপরাধমূলক কাজকে প্রশয় দেওয়া যায় না।
তবে বিরোধী নেতা ভিডি সাথীসান এনিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর দাবি কান্নুরের সাংবাদিক একের পর এক স্টোরি করেছেন।এভাবে পুলিশ দিয়ে অভিযান করা আগে শোনা যায়নি। এমনকী যে মেয়েটিকে স্টোরিতে দেখানো হয়েছিল তার মুখটি দেখানো হয়নি।
এশিয়া নেট অফিসে পুলিশের অভিযান প্রসঙ্গে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, কারোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হলে সেটা তার পেশার উপর নির্ভর করে না। একটি ভুয়ো ভিডিয়ো তৈরি করে তা সম্প্রচার করাটা সাহসী সাংবাদিকতা নয়। এর সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, এই অভিযানকে কখনই বিবিসির অফিসে আয়কর দফতরের সমীক্ষার সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। তারা সরকার বিরোধী সম্প্রচার করেছিল বলে এই অভিযান এমনটা নয়।