রেল স্টেশনে ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ বহুতল। এর জেরে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়লেন বহু শ্রমিক। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কনৌজে। রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার বিকেলে উত্তরপ্রদেশের কনৌজ রেলওয়ে স্টেশনে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়লে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৪০ জন শ্রমিক ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন। কানপুর ডিভিশনের কমিশনার কে বিজয়েন্দ্র পান্ডিয়ান জানিয়েছেন, গভীর রাত পর্যন্ত ২৮ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে কনৌজ, কানপুর ও লখনউ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'উদ্ধার কাজ চলছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে যারা এখনও আটকা পড়েছেন তাদের খুঁজে বের করতে আমরা ড্রোন, স্নিফার ডগ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করছি।' এদিকে, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার কাজ অব্যাহত রেখেছে। জানা গিয়েছে, আহতদের মধ্যে ৫ জনকে লখনউতে, দুজনকে কানপুরে এবং ১৫ জনকে কনৌজের তিরওয়ায় অবস্থিত সরকারি মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ১৫০ ফুট লম্বা, ৪৫ ফুট চওড়া একটি স্ল্যাব ২০ ফুট উচ্চতায় বসানোর সময় এই বিপত্তি ঘটে। সেই সময় স্টেশনের পাশের ভারা খুলে যায়। এর যেরে কাঠামোটি দ্রুত ধসে পড়ে। দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব রেলের মুখপাত্র পঙ্কজ কুমার সিং জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং গুরুতর আহতদের আড়াই লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে। ইজ্জতনগর ডিভিশনের অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার, প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং চিফ সেফটি কমিশনার দিয়ে তদন্ত করা হবে।
স্টেশনটির পুনর্নবীকরণের লক্ষ্যে এই নির্মাণকাজ চলছিল। অমৃত ভারত প্রকল্পের অংশ ছিল নির্মাণটি। স্টেশন মাস্টার আনন্দ প্রসাদ জানান, গত দু'মাস ধরে এই কাজ চলছে। দুর্ঘটনায় অক্ষত থাকা পান্না লাল নামে এক শ্রমিক জানান, ওই জায়গায় প্রায় ৪০ জন শ্রমিক ছিলেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরপরই কাজ শুরু হয়েছিল। আগেই সেখানে অর্ধেক স্ল্যাব স্থাপন করা হয়ে গিয়েছিল। স্টেশনের প্রবেশপথের কাছে লোহা ও বাঁশের ভারা সামলাচ্ছিলেন চার-পাঁচজন শ্রমিক। পান্না লাল বলেন, 'হঠাৎ করেই কাঠামোটি এই প্রান্তে ভেঙে পড়তে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো স্ল্যাব ধসে পড়ল। আমি কোণে ছিলাম এবং দৌড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম। এরপরই চারদিকে চিৎকার শুরু হয়।' পুলিশ এবং আরপিএফ কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন। উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার জন্য কনৌজ পুরসভা বুলডোজার এবং ক্রেন সহ একটি দল পাঠায়। তবে ততক্ষণে অন্ধকার নেমে আসায় উদ্ধারকাজে বিলম্ব হয়। ক্রেন ও বুলডোজারে আলো লাগানোর ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন।