ভুল করে ভিন্ন ট্রেনে সফর করলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে কখনই বেআইনি হিসেবে গণ্য করা যাবে না এবং শুধুমাত্র এই কারণে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ থেকে তাঁর পরিবারকে বঞ্চিত করা যাবে না। মহারাষ্ট্রের ভাণ্ডারা জেলার তুমসার তহশিল নিবাসী ৫৪ বছর বয়েসি এক মহিলার দায়ের করা দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ দাবি মামলায় সম্প্রতি এই রায় দিয়েছে বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ।
বিচারপতি অনুজা প্রভুদেশাইয়ের এক সদস্যের বেঞ্চ মামলাকারী মুন্নিবাই চৌবেকে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৮ লাখ টাকা আগামী ৩ মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে ভারতীয় রেলকে নির্দেশ দিয়েছে।
২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে নাগপুর থেকে তুমসার যাওয়ার পথে লোকমান্য তিলক টার্মিনাস-হাওড়া জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে সফর করার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন মুন্নিবাইয়ের ছেলে ভিকি। চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গেলে তাঁকে স্থানীয় কেটিএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে ঘোষণা করেন।
ট্রেনে সফরকালীন ছেলের মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করে ২০১৩ সালে নাগপুরের রেলওয়ে ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন মুন্নিবাই। ট্রাইব্যুনাল স্বীকার করে যে, নিহত ছেলের উপরে নির্ভরশীল ছিলেন রোজগারহীন মা। স্বীকার করে নেওয়া হয় যে, অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ভিকির মৃত্যু হয়েছে এবং তিনি বিনা টিকিটে নাগপুর থেকে তুমসার যাত্রা করছিলেন। কিন্তু বৈধ যাত্রী না হওয়ায় মুন্নিবাইকে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে ট্রাইব্যুনাল। বাধ্য হয়ে হাই কোর্টে আবেদন জানান বৃদ্ধা।
বিচারে হাই কোর্টের নজরে আসে যে, নাগপুর থেকে তুমসার রোড যাওয়ার রেল টিকিট তাঁর কাছে থাকলেও ভুল ট্রেন হিসেবে ভিকি জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন।
আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, ‘শুধুমাত্র ভুল ট্রেনে যাত্রা করার জন্য তাঁকে অবৈধ যাত্রী হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না। চলন্ত ট্রেন থেকে দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়ে যে চোট পেয়েছিলেন, তাতেই মৃত্যু হয় ভিকি চৌবের।’
ট্রাইব্যুনালের রায় নাকচ করে হাই কোর্ট জানায়, ‘ক্ষতিপূরণের দাবি নস্যাৎ করে ট্রাইব্যুনাল ভুল করেছে, কারণ টিকিট থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র ভুল ট্রেনে সফরের কারণে তাঁকে অবৈধ যাত্রী বলা নীতিবিরুদ্ধ।’