৩৩ বছরের আমলার মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা। প্রয়াত প্রিয়াঙ্কা বৈষ্ণব রাজস্থান অ্য়াডিমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (আরএএস)-এর আধিকারিক ছিলেন। বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গুজরাতের আহমেদাবাদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে প্রিয়াঙ্কার। তারও আগে যোধপুরে নিজের অস্ত্রোপচার করান প্রিয়াঙ্কা। তার জেরেই এই মৃত্যু বলে অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্য়রা। তার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত করা হয়েছে।
আদতে রাজস্থানের বিকানেরের বাসিন্দা ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। ২০১৬ সালে আরএএসে উত্তীর্ণ হয়ে আমলা হন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, ৩৩ বছরের প্রিয়াঙ্কা দুই সপ্তাহ আগে যোধপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে একটি অস্ত্রোপচার করান তিনি।
এই অস্ত্রোপচারের পর থেকেই প্রিয়াঙ্কা অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন তাঁর আত্মীয় ও পরিজনেরা। ক্রমশ তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। অভিযোগ, যোধপুরের হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময়েই কিছু ভুল বা গাফিলতি হয়েছিল। তার জন্যই প্রিয়াঙ্কাকে প্রাণ হারাতে হয়।
যোধপুরের জেলাশাসক গৌরব আগরওয়াল পুরো ঘটনা জানার পরই তৎপর হন। তিনি ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই তদন্তভার দেওয়া হয়েছে পাঁচ সদস্যের একটি দলের উপর। যার নেতৃত্বে রয়েছেন যোধপুরের সম্পূর্ণ নন্দ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ভারতী সারস্বত।
প্রসঙ্গত, আগে যোধপুরেরই সহকারী কালেক্টর পদে কর্মরত ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। চলতি মাসে তাঁর বদলি হয়। তাঁকে যোধপুর উত্তর পৌর নিগমের ডেপুটি কমিশনার পদে বদলি করা হয়। কিন্তু, সেই পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করার আগেই প্রাণ যায় প্রিয়াঙ্কার।
একজন তরুণ আমলার এহেন প্রয়াণে শোকস্তব্ধ তাঁর সহকর্মীরা। শোকবার্তা দিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, 'রাজস্থান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের আধিকারিক প্রিয়াঙ্কা বৈষ্ণবের প্রয়াণ অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রভু শ্রীরামের কাছে আমার প্রার্থনা, তিনি যেন প্রয়াত আধিকারিকের আত্মাকে তাঁর চরণে স্থান দেন। এবং এই কঠিন সময়ে মৃতার পরিবার ও পরিজনদের শোক সহ্য করার শক্তি দেন।'
অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সূত্রে জানানো হয়েছে, তারা মৃতার পরিবারের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছে। সত্যিই দুই সপ্তাহ আগের অস্ত্রোপচারের সময় কোনও গাফিলতি হয়েছিল কিনা, তা অবশ্যই যাচাই করে দেখা হবে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা হবে।
প্রশাসনের আশ্বাস, যদি সত্যিই কারও দোষে প্রিয়াঙ্কাকে জীবন হারাতে হয়, তাহলে দোষীকে অবশ্যই পাকড়াও করা হবে এবং আইন অনুসারে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।