ফের কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক হল ভারত ও চিনের মধ্যে। অন্যদিকে লাদাখ নিয়ে সেনাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। অন্যদিকে দুই দেশের সম্পর্কে যে বিভেদ তৈরী হয়েছে, সেটি মেটানোর জন্য এদিন এক বিশেষ বার্তা দিলেন ভারতে স্থিত চিনের রাষ্ট্রদূত।
শুক্রবার রাজনাথ সিং তিন সেনা প্রধান ও সিডিএস বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারত ও চিনের কোর কম্যান্ডারদের মধ্যে আগামী বৈঠক কয়েকদিনের মধ্যেই। সেই পরিপ্রক্ষিতেই এদিনের আলোচনা হয়।
প্যাংগং সো থেকে কীভাবে চিনাদের ফিঙ্গার ফোর থেকে এইটের ওপারে পাঠানো যায়, এখন সেটাই চ্যালেঞ্জ ভারতের। একই সঙ্গে ডেপাসাং সেক্টেরে লাল ফৌজের গতিবিধির ওপরও নজর রাখছে ভারত। এদিন চিনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গেও কথা বলেন রাজনাথ সিং।
কূটনৈতিক স্তরে এদিন আরেক দফা বৈঠক হয় যেখানে দুই দেশই সীমান্তে শান্তির পক্ষে জোরালো সওয়াল করে। Working Mechanism for Consultation and Coordination (WMCC) এই বৈঠকে উত্তেজনা কমানোর ক্ষেত্রে কতটা কাজ হয়েছে তার ওপরেও জোর দেওয়া হয়। আগামী সপ্তাহে ফের হবে এই বৈঠক। মিলিটারি কম্যান্ডাররা ডিসএনগেজমেন্টের যে প্রক্রিয়া রূপায়ণ করেছেন, সেটা মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার পর্যালোচনা হয় এই বৈঠকে। তবে গালওয়ান নিয়ে চিনের দাবি যে ভারত মানবে না, তা সাফ করে দেওয়া হয়েছে।
ভারতের তরফ থেকে বলা হয় যে দুই পক্ষই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সরাতে রাজি হয়েছে। প্রায় একই কথা চিন বললেও সীমান্তে উত্তেজনা আরও কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বেজিংয়ের বিবৃতিতে।
এই বৈঠকের পরেই চিনের রাষ্ট্রদূত একটি ভিডিও বার্তায় বলেন দুই পক্ষকেই শান্তি বাছতে হবে সংঘাতের জায়গায়। সীমান্তে শান্তি রাখতে হবে যতদিন না কোনও মোটামুটি সমাধানসূত্র বেরোচ্ছে।
চিনা পণ্য বাদ দেওয়ার ভারতে যে ডাক উঠেছে সেটা নিয়ে সুন বলেন যে এতে ভারতের গ্রাহক ও চিনের ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হবে। দুই দেশকেই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে বলে তিনি জানান।মূলত পাঁচটি বিষয় তিনি তুলে ধরেন-ভারত ও চিনের পার্টনার হওয়া উচিত, শান্তি প্রয়োজন বিবাদ এড়িয়ে, দুই পক্ষের সুবিধার্থে একজোট হতে হবে, একে অপরের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করতে হবে ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
ভারত ও চিনের ইতিহাস, ও মোদী-জিনপিংয়ের আলোচনায় হওয়ার ঐক্যমত্যের কথাও তুলে ধরেন তিনি। কিন্তু এসবের মধ্যেও সুন গালওয়ানের সংঘর্ষের জন্য ভারতকেই দুষেছেন। সুনের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের বক্তব্য হল যে রাষ্ট্রদূত এই বার্তা দিতে চেয়েছেন যে এখনকার বিভেদের বাইরেও দুই দেশের মধ্যে গভীর একটা সম্পর্ক রয়েছে। সেটা যেন অটুট থাকে।