প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর ও সংবেদনশীল বলে জানালেন সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবর্ণে। দুই দিনের সফরে লে তে গিয়েছেন সেনাপ্রধান। সেখানেই তিনি জানালেন যে ভারতের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সেনা। বর্তমানে লাদাখ সেক্টরে চিন ও ভারত, দুই পক্ষই ভারী অস্ত্রশস্ত্র ও প্রায় লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। অন্যদিকে গত চার মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার নিরসন করতে সুদুর রাশিয়ায় এদিন বৈঠকে বসতে চলছেন ভারত ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। গালওয়ান পরবর্তী সময় এই প্রথম নেতৃত্ব স্তরে আলোচনা হবে পরিস্থিতি ঠান্ডা করার জন্য।
এদিন সেনাপ্রধান বলেন যে গত তিন মাস ধরেই পরিস্থিতি সংবেদনশীল। সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা হচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। নরবর্ণে বলেন তিনি আত্মবিশ্বাসী কথার মাধ্যমেই সমাধানসূত্র বেরোবে।
কিন্ত সেই জন্য নিজেদের রক্ষণ ঢিলে দিচ্ছে না ভারত। সেনাপ্রধান বলেন যে ভারতীয় সেনা বিশ্বের মধ্যে সেরা ও সারা দেশের গর্ব তারা। একই সঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন যে এই মুহূর্তে সীমান্তে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত। লে সফরে এসে জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেছেন সেনাপ্রধান। সেই প্রসঙ্গে তিনি জানান যে জওয়ানরা একেবারে পূর্ণ উদ্যমে আছে ও যে কোনও রকম চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
গতকাল চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত জানিয়েছিলেন যে চিন ও পাকিস্তান যৌথ অপারেশন করতে পারে ও সেটি প্রতিহত করতে ভারত তৈরী। পাকিস্তানকে কোনও বেগড়বাই না করার পরামর্শ দেন তিনি।
অন্যদিকে এদিন স্কো-বৈঠকের ফাঁকে সীমান্তে অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে ভারত ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের। চিনের জেনারেল ওয়েই ফেংঘে-র সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজনাথ সিং। চিনের আগ্রাসনের পর এই প্রথম এত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে। ইতিমধ্যেই মস্কো পৌঁছ গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব। এতদিন তিনিই ভারতের প্রতিনিধি ছিলেন সমস্ত কূটনৈতিক বৈঠকে।
রাজনাথ সিং যেমন বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা তেমনই চিনের জেনারেল ওয়েই ওখানকার সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের সদস্য়, যারা লাল ফৌজকে নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর বিদেশমন্ত্রকদের স্কো সভার ফাঁকে জয়শংকরের সঙ্গে ওয়াং ই-এর বৈঠক হতে পারে। এই দুই বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যে অচলাবস্থা রয়েছে, সেটা কাটে কিনা, সেটাই দেখার।