ভারতের উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের তাঁবেদারি করছেন তিনি। বিরোধীদের যুক্তিসঙ্গত বক্তব্য শুনতে চান না। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে স্বজনপোষণ করছেন। তাই এই অভিযোগ তুলে জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে খারিজ হওয়া সেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিরোধীদের খোঁচা দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনা নিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘বিরোধীরা সবজির ছুরি দিয়ে বাইপাস সার্জারি করার চেষ্টা করেছিল।’
বিরোধীরা বীতশ্রদ্ধ হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এবার শীতকালীন অধিবেশনে সংসদের দুই কক্ষই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সেখানে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের আচরণ পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ তোলা হয়। তারপরই অনাস্থা আনা হয়। যা সম্প্রতি খারিজ হয়ে গিয়েছে। তারপরই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় বলেন, ‘যে কোনো সাংবিধানিক অবস্থানকে পরমানন্দ, অসাধারণ গুণাবলী এবং সাংবিধানিকতার প্রতি অঙ্গীকারের মাধ্যমে প্রমাণিত করতে হয়। আমরা হিসেব কষার মতো অবস্থায় নেই। এই প্রস্তাবটি পড়ার পর আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম।’
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের নয়া প্রকল্প ‘শিক্ষাসাথী’, পড়ুয়ারা কোন বিশেষ সুবিধা পেতে চলেছেন?
বিরোধীদের আনা নোটিশ সম্পর্কে কটাক্ষও করেছেন জগদীপ ধনখড়। বাছা বাছা শব্দে বিরোধীদের তুলোধনা করেছেন তিনি। এই বিষয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘উপরাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে নোটিশটা তো দেখুন। চন্দ্রশেখরজি বলেছিলেন, সবজি কাটার ছুরি দিয়ে কখনও বাইপাস সার্জারি করবেন না। এমনকী এটি সবজি কাটার ছুরিও ছিল না। যে ব্যক্তি আমার নোটিশ লিখেছিল তাঁর ছুরিতে মরিচা পড়েছিল! পড়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। কিন্তু আমি অবাক হয়েছি যে আপনারা কেউই এটি পড়েননি।’
সংসদে এবার কম কাজ হয়েছে। সেটা নিয়েও মন্তব্য করেছেন জগদীপ ধনখড়। যদিও বিরোধীরা পরে আবার সোচ্চার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। উপরাষ্ট্রপতির কথায়, ‘গত কয়েক দশকে সংসদে বড় বিতর্ক লক্ষ্য করেছেন? আপনি কি সংসদের কক্ষে কোনও দুর্দান্ত অবদান লক্ষ্য করেছেন? আমরা ভুল কারণে খবরে এসেছি। আমরা শৃঙ্খলার সঙ্গে বাঁচতে শিখেছি। যা কেবল একটি ব্যাধি। তবে সংবাদমাধ্যমকেই জবাবদিহি করতে হবে। কারণ বৃহত্তর জনগণের কাছে পৌঁছানোর একমাত্র বাহন সংবাদমাধ্যমই।’ গত ১০ ডিসেম্বর জগদীপ ধনখড়কে তাঁর পদ থেকে অপসারণের নোটিশে অন্তত ৬০ জন বিরোধী সদস্য স্বাক্ষর করেছিলেন। অভিযোগ করেছিলেন, তিনি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নোটিশটি খারিজ করে দেন।