রাজ্যসভার চেয়ারম্য়ান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের অপসারণ চেয়ে বৃহস্পতিবার সংসদের উচ্চ কক্ষে ইমপিচমেন্ট নোটিশ পেশ করেন বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সাংসদরা। যদিও পত্রপাঠ সেই নোটিশ খারিজ করে দেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং।
তাঁর বক্তব্য, বিরোধীদের এই প্রয়াস অনুচিত এবং এক অনৈতিক অপচেষ্টা। এমনকী, তাঁদের এই উদ্যোগের ফলে জগদীপ ধনখড়ের ভাবমূর্তিও কলুষিত করা হয়েছে বলে মনে করেন ডেপুটি চেয়ারম্যান।
একইসঙ্গে তাঁর দাবি, এই নোটিশে যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। এবং এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে বিরোধী সাংসদরা উপরাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের অবমাননা করারও অপচেষ্টা করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে সংসদের নিজস্ব টিভি চ্যানেল - সংসদ টেলিভিশন-এর পক্ষ থেকে এদিন একটি সোশাল মিডিয়া পোস্ট করা হয়। তাতেই জানানো হয়েছে, ধনখড়ের বিরুদ্ধে বিরোধী সাংসদদের আনা প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের উপরাষ্ট্রপতির পদটি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। এই পদমর্যাদার বলেই দেশের উপরাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার চেয়ারম্য়ান পদেও আসীন হন।
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, এমন গুরুত্বপূর্ণ দু'টি পদে থাকা সত্ত্বেও ধনখড় পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের আবেগপ্রবণ প্রতিনিধির মতো আচরণ করেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত ১০ ডিসেম্বর INDIA-এর বিভিন্ন শরিক দলের অন্তত ৬০ জন সাংসদ ধনখড়ের অপসারণ চেয়ে নোটিশ জমা করেন। কেন এমন পদক্ষেপ করা হল, তার ব্যাখ্য়াও দেন কংগ্রেস নেতা তথা দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ।
সেই সময় তিনি বলেছিলেন, 'আসলে INDIA-এর শরিক দলগুলির কাছে আর কোনও উপায় অবশিষ্ট নেই। তারা বাধ্য হয়েই রাজ্যসভার মাননীয় চেয়ারম্য়ানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ, তিনি (চেয়ারম্যান) মারাত্মক রকমের পক্ষপাতদুষ্ট।'
রমেশের অভিযোগ ছিল, ধনখড় যেভাবে নির্দিষ্ট পদে থেকে তাঁর দায়িত্বগুলি পালন করছেন, তাতে তাঁর সেই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ভীষণভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। যদিও শেষ পর্যন্ত বিরোধী শিবির ধনখড়ের ইমপিমেন্টের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত পরিমাণ সমর্থন জোগাড় করে উঠতে পারেনি।
তারপরও যখন বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাব পেশ করা হয়, তৎক্ষণাৎ রুল জারি করে তা খারিজ করে দেন ডেপুটি চেয়ারম্য়ান। হরিবংশ নারায়ণ সিং এই প্রস্তাবের মধ্য়ে একাধিক ত্রুটি তুলে ধরেন।
তাঁর রুলিংয়ের বক্তব্য অনুসারে, 'এই নোটিশ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, অত্যন্ত ক্যাজুয়ালভাবে এটি তৈরি করা হয়েছে। নোটিশের প্রত্যেকটি দিকই প্রবলভাবে ত্রুটিপূর্ণ।'
ডেপুটি চেয়ারম্য়ানের তরফে আরও বলা হয়, যে তথ্যপ্রমাণ ও নথিপত্র এক্ষেত্রে পেশ করার দরকার ছিল, সেগুলি পেশ করা হয়নি। এমনকী, সারা প্রস্তাবে কোথাও উপরাষ্ট্রপতির নামের সম্পূর্ণ বানানটুকুও ঠিক করে লেখা হয়নি! প্রস্তাবের স্বপক্ষে কেবলমাত্র কিছু মিডিয়া রিপোর্ট জুড়ে দেওয়া হয়েছে।